এম এম নুর আলম ॥ সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জের আংশিক এলাকা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৩ আসন। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩১ হাজার ৩৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১৮ হাজার ২৪৬ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ১৩ হাজার ১৩১ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৩ জন। আশাশুনির ৮৬ টি কেন্দ্রের ৫১৬টি বুথ, দেবহাটার ৪০টি কেন্দ্রের ২৩২ টি বুথ, কালিগঞ্জ এ ২৮ টি কেন্দ্রের ১৮৭ টি বুথে ভোটাররা ভোট প্রদান করবেন। সাতক্ষীরা-৩ আসনে আগামী ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে বিভিন্ন দলের ৬ প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। যার মধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক নৌকা প্রতীক, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টি এড. স. ম. আলিপ হোসেন, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে রুবেল হোসেন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল এর শেখ তরিকুল ইসলাম লড়ছেন চাকা প্রতীক নিয়ে, এনপিপির মোঃ আব্দুল হামিদ আম প্রতীক এবং জাকের পার্টির মঞ্জুর হোসেন গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর এ এম রিয়াছাত আলী বিশ্বাস দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অধ্যাপক আলী আহমেদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডাঃ এসএম মোখলেছুর রহমান বিজয়ী হন। ২০০১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অষ্টম সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর এ এম রিয়াছাত আলী বিজয়ী হন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক বিজয়ী হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আ.ফ.ম রুহুল হক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আ,ফ.ম রুহুল হক পূনরায় বিজয়ী হন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৩ আসনে এবার লড়াইয়ে নেমেছেন ছয় জন। যাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিন বারের নির্বাচিত এমপি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রহুল হক। এছাড়াও জাতীয় পার্টির এড. স. ম. আলিপ হোসেন, তৃণমূল বিএনপির রুবেল হোসেন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) এর শেখ তরিকুল ইসলাম, এনপিপির প্রার্থী মো. আব্দুল হামিদ ও জাকের পার্টির মঞ্জুর হোসেন প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই এ আসনটিতে প্রচার প্রচারনা শুরু করছেন। তবে দলীয় প্রার্থীর প্রচারনা ও নির্বাচনী সভা-সমাবেশে এগিয়ে রয়েছে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ডা: আ ফ ম রুহুল হকের কর্মী-সমর্থকরা। ইতোমধ্যেই দেবহাটা-আশাশুনি ও কালীগঞ্জের নির্বাচনী এলাকার প্রত্যেকটি এলাকায় ছেয়ে গেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রুহুল হকের নির্বাচনী পোষ্টার। বর্তমানে চায়ের দোকান থেকে হাট-বাজার, অফিস পাড়া থেকে শুরু করে মাঠে ঘাটে কর্মরত শ্রমিক ও সাধারন মানুষের মধ্যে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা ও আলোচনা সমালোচনা। ভোটারদের অনেকেই বলছেন, সাতক্ষীরা-৩ আসনে রুহুল হকের পাশাপাশি অন্য কোন হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় তার নির্বাচনী ভিত বেশ মজবুত। তার সমর্থকরা জানান, উন্নয়নের দিকে তাকালে নৌকার কোন বিকল্প নেই। এখন দেখার বিষয় আগামী ৭ জানুয়ারী নির্বাচনে এ আসনের ভোটাররা কাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে জাতীয় সংসদের যাওয়ার সুযোগ করে দেন।