দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ হামাসের শীর্ষ নেতা সালেহ আল আরোরী সহ সাত শীর্ষ নেতাকে হত্যার প্রতিশোধ গ্রহনের ঘোষণা দিয়ে হামাস যোদ্ধারা অপ্রতিরোধ্য গতিতে দখলদার ইসরাইল বাহিনীর উপর একের পর এক হামলা চালিয়ে চলেছে। তারা ইসরাইলের ভূ-খন্ডে ও অব্যাহত ভাবে হামলা পরিচালনা করছে। হামাসের পক্ষ হতে বলা হয়েছে নেতা হত্যার প্রতিশোধের স্পৃহা প্রতিজন হামাস যোদ্ধাদের মন মানসিকতায় প্রথিত। সাধারন সৈনিকরা তাই তাৎক্ষনিক ভাবে হামলা পরিচালনা শুরু করেছে। হামাসের সাথে ইসরাইলের মধ্যাস্থতাকারী দুটি দেশ কাতার ও মিশরকে হামাসের পক্ষ হতে তাৎক্ষনিক ভাবে জানান দেওয়া হয়েছে যে তারা ইসরাইলের সাথে কোন ধরনের আলোচনায় বসবে না। হামাস এমন দৃঢ় বার্তা তাদের টেলিগ্রামের পোষ্টে ও পোষ্ট করেছে। হামাসের হাজার হাজার যোদ্ধা নিজেদের কে কখনও ইসরাইলের গুলির মুখে আবার কখনও নিরাপদে অবস্থান নিয়ে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে চলেছে। গতকাল ও গাজার উত্তরাঞ্চলের একাধিক এলাকাতে হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছে। দখলদার বাহিনী আশ্রয় শিবির গুলোতে হামলা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল আল ফারাহ আশ্রয় শিবিরে কয়েক ধাপে বিমান হামলা পরিচালনা করেছে দখলদার বাহিনী। গতকাল অর্থাৎ চব্বিশ ঘন্টায় ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত তিন শতাধিক ফিলিস্তীনি নিহত হয়েছে। প্রায় তিন মাসে দখলদার বাহিনীর হামলায় পঁচিশ হাজার নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তীনির নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামাস যোদ্ধারা হারিয়ে যাইনি, ইসরাইল বাহিনী যদি পুরো গাজা উপত্যকাকে ধুলার সাথে মিশিয়ে দেয় তবুও হামাস শেষ হবে না। প্রতিজন ফিলিস্তীনি এক একজন হামাস, আমরা হয় মরবো নতুবা মারবো এটাই হামাস এমনই বক্তব্য হামাসের। হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, ইসরাইল বাহিনী তথা ইসরাইল নামক অমানবিক রাষ্ট্রটি আসলেই যে ভীতু এবং পরাজিত তার জলন্ত উদাহরন আমাদের নেতাদেরকে গুপ্ত হত্যা করা। সাহস, শক্তি আর সক্ষমতা থাকলে গাজার ভূমিতে এসে যুদ্ধ করলে শক্তি আর সক্ষমতার পরিচয় না দিয়ে তারা গুপ্ত হামলায় মেতে উঠেছে। এদিকে লেবাননের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে হামাস নেতৃত্বকে হত্যা করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে লেবানন। হিজবুল্লাহ প্রধান গতকাল ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেছেন, ইসরাইল লেবাননের অভ্যন্তরে প্রবেশ পরবর্তি ড্রোন হামলা চালিয়ে যে বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পরিচালনা করেছে তার কোন ক্ষমা নেই। হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদেরকে ইসরাইলের অভ্যন্তরে অধিকতর হামলা পরিচালনার আহবান জানিয়েছেন। যে কোন সময়ে লেবানন ইসরাইলের ভূ-খন্ডে হামলা পরিচালনা করতে পারে। গতকাল আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোর খবরে বলা হয়েছে লেবাননে ইসরাইলের ড্রোন হামলা কে কেন্দ্র করে গোটা মধ্যপ্রাচ্য ময় যুদ্ধের দামামা বেজে উঠতে পারে বিশেষ করে লেবানন, ইরান এবং আরব দেশগুলো ইসরাইলের হামলা পরিচালনা করলে কিছু করার থাকবে না। ইতিমধ্যে ইরান তার যুদ্ধজাহাজ লোহিত সাগরে প্রেরন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ জোট ভূক্ত দশ দেশ লোহিত সাগর হতে হুতি যোদ্ধাদের বিতাড়িত করতে না পারায় লোহিত সাগরে ইসরাইল মুখি জাহাজে হামলা ও আটকের পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্বের বানিজ্য জাহাজ গুলো লোহিত সাগর দিয়ে চলতে দিচ্ছে না। গতকালও হুতি যোদ্ধারা লোহিত সাগরে চলাচল করা একাদিক জাহাজে হামলা পরিচালনা করেছে। গত এক মাসে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচলের সংখ্যা আশঙ্কা জনক ভাবে হ্রাস পেয়েছে। পশ্চিমা মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে লোহিত ও ভূ-মধ্য সাগরে চলাচল করা জাহাজগুলো বর্তমানে আফ্রিকা ঘুরে গন্তব্যে পৌছাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনকে হুশিয়ারী করে বলেছে হুতিদের নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ হলে ইয়েমেনকে চরম মুল্য দিতে হবে। এদিকে ইসরাইল দুই মন্ত্রী মন্তব্য করেছেন গাজা হতে ফিলিস্তীনিদেরকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে ইসরাইল মন্ত্রীদের এমন বক্তব্য প্রত্যাখান করেছেন একই সাথে সৌদি আরবের পক্ষ হতে বলা হয়েছে এমন বক্তব্য কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। এমনই প্রতিবাদ জানিয়েছেন নেদারল্যান্ড। এদিকে হামাস এর সর্বশেষ টেলিগ্রাম বার্তায় বলেছে যে যুদ্ধের যে কোন ধরনের পরিনতির বিষয়টি মাথায় রেখেই হামাস যুদ্ধে নেমেছে। খান ইউনিসের নিয়ন্ত্রন নিয়ে গতকালও তুমুল যুদ্ধ করেছে হামাস। সর্বশেষ খবরে প্রকাশ খান ইউনিস দখলদার মুক্ত বলে জানিয়েছে হামাস। হামাসের শীর্ষ সাত নেতাকে হত্যার পর ইসরাইল গোয়ে’ন্দা বৃত্তির মাধ্যমে ইরানের শহীদ জেনারেল কাসেম সোলাইমানীর মৃত্যু দিনে তার মাজার সংলগ্ন এলাকাতে ভয়াবহ দুটি বোমার বিষ্ফরন ঘটিয়েছে। উক্ত বোমা হামলায় অন্তত শতাধীক ইরানীর নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।