শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৯ পূর্বাহ্ন

ইসরাইলে যে কোন সময় লেবাননের হামলা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৪

দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইল গাজা যুদ্ধের মাঝে প্রথম থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নামটি আলোচনায় থেকেছে এই ভাবে যে, ইসরাইলকে সর্বতভাবে সাহায্য ও সমর্থন যোগাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু এবার পশ্চিমা মিডিয়াগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম এসেছে এই ভাবে যে হামাস, ইসরাইল ও হুতি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল পশ্চিমা মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে লোহিত ও ভূমধ্যসাগরে হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং হুতি যোদ্ধাদের প্রতি ইয়েমেন সরকার সমর্থনশীল বিধায় এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইয়েমেনে হামলার পরিকল্পনা করছে। খবরে এমন ও বলা হয়েছে যে, সহসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে হামলা পরিচালনা করতে চলেছে এমন খবর ও বলা হয়েছে। এদিকে গতকাল ও গাজার বিভিন্ন এলাকাতে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ব্যাপক ভিত্তিক বোমা হামলা পরিচালনা করেছে। গত চব্বিশ ঘন্টায় ইসরাইলের বোমা হামলায় অন্তত একশত পঁচিশজন ফিলিস্তীনির নির্মম ভাবে মৃত্যু হয়েছে। গত প্রায় তিনমাসে ইসরাইলের বিমান হামলায় প্রায় তেইশ হাজার নিরীহ ফিলিস্তীনি নিহত হয়েছে। তবে ইসরাইলি বাহিনী বিমান হামলায় সফল হলেও গাজায় স্থল হামলা ও স্থল অভিযানে প্রতিমুহুর্তে হামাস যোদ্ধাদের দ্বারা কঠোর ও কঠিন প্রতিরোধের সম্মুখিন হচ্ছে। গতকাল ও গাজায় পশ্চিম অঞ্চলের একাধিক এলাকাতে ইসরাইলি বাহিনীর সাথে হামাস যোদ্ধারা সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। হামাস যোদ্ধারা তাদের সুরক্ষিত সুড়ঙ্গে অবস্থান নিয়ে মরনপন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন যাবৎ দখলদার বাহিনীর সদস্যরা যেমন হতাহতের শিকার হচ্ছে অনুরুপ ভাবে তাদের ট্রাঙ্ক ও সাজোয়া যান ধ্বংস হচ্ছে। খান ইউনিস এলাকা হতে এক সপ্তাহ যাবৎ বিতাড়িত দখলদার সেনারা। লাজিয়া জেলা হতে ও দখলদার ইসরাইলি সেনারা হামাসের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পিছুটান দিয়েছে। গত তিন চার দিন পূর্বে গাজার দক্ষিন এলাকা হতে অন্তত পাঁচ ব্রিগেড সেনা দখলদার বাহিনী প্রত্যাহার করলেও সেনাদেরকে এখনও পর্যন্ত ফিরিয়ে আনা হইনি। লেবাননের অভ্যন্তরে ইসরাইল ড্রোন হামলা চালিয়ে শীর্ষ হামাস যোদ্ধা সহ সাত হামাস যোদ্ধাকে হত্যার পর থেকে সাধারন হামাস যোদ্ধা (সেনাদের) মাঝে প্রতিশোধের স্পৃহা তৈরী হওয়ায় গত তিনদিন যাবৎ হামাস গাজায় অবস্থান রত ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা পরিচালনা করেই চলেছে। হামাসের পক্ষ হতে বলা হয়েছে যে হামাস তাদের পবিত্র ও প্রিয় ভূমি গাজা ছেড়ে যাবে না, গোটা গাজা উপত্যকাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলেও হামাস গাজায় টিকে থাকবে। এদিকে কাতার ও মিশরের পক্ষ হতে দীর্ঘসময় যাবৎ হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ বিরতির ক্ষেত্রে মধ্যাস্থতা করার ঘটনার সমাপ্তি হয়েছে। কারন হামাসের পক্ষ হতে বলা হয়েছে কোন ভাবেই বর্বর ও হামলাকারী ইসরাইলের সাথে কোন ধরনের যুদ্ধ বিরতির বা অন্য কোন বিষয়ে আলোচনা হবে না। লেবাননের অভ্যন্তরে ইসরাইলে হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতা সহ সাত হামাস সদস্য হত্যাকান্ডের পর লেবানন কঠোর হুশিয়ারী ও প্রতিশোধ গ্রহনের ঘোষনার পর ইসরাইলের হামলায় হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের শীর্ষ নেতৃত্ব সহ দশজনকে হত্যা করেছে ইসরাইল। হামাস ইসরাইল যুদ্ধ যে কোন সময় গোটা মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে বিস্তৃত ঘটতে পারে। সৌদি আরব ইসরাইলের হামলাকে কেবল বেআইনি বলেই চুপ থাকছে না সৌদি আরব ইসরাইলি হামলাকে মানবতা বিরোধী হিসেবে উল্লেখ করে অবিলম্বে তা বন্ধের আহবান জানান। লেবানন যে কোন সময়ে ইসরাইলের ভূ-খন্ডে ভয়াবহ হামলা পরিচালনা করতে পারে এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে বিশ্ব মিডিয়াগুলো। লেবানন মনে করছে রাজধানী বৈরুতে হামাসের দ্বিতীয় প্রধান সালেহ আল আরৌরি নিহত হইনি ইসরাইল লেবাননকে হামলা করেছে। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসারুল্লাহ ঘোষনা দিয়েছে ইসরাইলকে কোন ভাবেই ছেড়ে দেওয়া হবে না। তিনি যোদ্ধাদের তথা বিশ্ববাসির উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় বলেছে, ইসরাইল একটা ভয়ানক ও বিপদজনক অপরাধ করেছে যা ক্ষমার অযোগ্য। বিগত ২০০৬ সালে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ ভয়াবহ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। উক্ত যুদ্ধ চৌত্রিশ স্থায়ী হয়, হিজবুল্লাহর হামলায় তৎকালীন সময়ে বহু ইসরাইলি সেনা হতাহত হয় এবং উল্লেখযোগ্য পরিমান ইসরাইলি সেনাকে পনবন্দী করে। পরবর্তিতে ইসরাইল সৈন্য প্রত্যাহারের মাধ্যমে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক পররাষ্ট্র বিষরদদের অভিমত হিজবুল্লাহর অস্ত্র ভান্ডার ব্যাপক শক্তিশালী এবং তাদের পঞ্চাশ হাজার রকেট আছে। এই মুহুর্তে লেবাননের বা হিজবুল্লাহর ইসরাইলে হামলার বিকল্প নেই। হিজবুল্লাহ যদি ইসরাইলে হামলা পরিচালনা না করে তাহলে আবারও ইসরাইল লেবাননের আরও একটি হামাস স্থাপনায় হামলা করবে। এদিকে ইসরাইল গাজা যুদ্ধ শেষে একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে যা কেবল মাত্র দখলদারিত্বই শেষ কথা। এদিকে গতকাল থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গাজার পশ্চিম তীর ও পাঁচ আরব দেশ সফর শুরু করেছে। যাত্রাকালে তিনি ইসরাইলে যাত্রা বিরতি করেন, প্রায় তিন মাসে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় পঁয়তাল্লিশ হাজারের বেশী বোমা ফেলেছে। এ সকল বোমার ওজন পয়ষট্টি হাজার টনের বেশী, ধারনা করা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের বেসামরিক গাজা বাসির হত্যাবন্ধের বিষয়ে আলোচনা করবে। গাজার সড়কে ও ধ্বংস স্তুপের মাঝে এখনও লাশের গন্ধ গতকালও রেডক্রসের সদস্যরা লাশ দাফন করেছে। ফিলিস্তীনিরা পর্যাপ্ত খাদ্য না পাওয়ায় ত্রানের জন্য হাহাকার পড়েছে। অর্ধেকের বেশী ফিলিস্তীনি ক্ষুধার্থ ও সুপেয় পানি হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com