দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ পৌষের শেষ দিন গুলোতে শীতের চোখ রাঙানি চলছে তো চলছে। মাঘের প্রথম দিনেও শীতের প্রকোপ সমানতালে দেশকে কাহিল করে তুলেছে। কেবল উত্তরে নয় দেশের সর্বত্র শীতের ভয়ানকরুপ কেবল যন্ত্রণাদায়ক নয় চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে জনজীবনকে। সাতক্ষীরা সহ আশপাশের জেলা গুলোতে তীব্র শীতের দাপটের পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়েছে নানান ধরনের শীতবাসিত রোগ বালাই। জেলার সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ উপজেলা ভিত্তিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলো শীতবাহিত রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা নিতে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তীব্র শীতের কবলে সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ জনপদ, শীতের সাথে বইছে হীমশীতল বাতাস, সপ্তাহব্যপী চলা শীতের চোখ রাঙানীতেও পুরোপ্রকৃতি ও যেন স্বাভাবিকতা হারিয়েছে। সূর্যের আলো শীত নিবারন না করে সূর্য দীর্ঘ সময় যাবৎ হারিয়ে যাচ্ছে। রাতে শীতবৃষ্টি আর সকাল দশ/ এগারটা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে সড়ক পথ, প্রান্তর, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ঘটছে ছন্দপতন, শীতের সাথে যেন অসম প্রতিযোগিতায় নেমেছে শীতবাহিত তথা ঠান্ডাজনিত রোগ, সাতক্ষীরার ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে ছর্দি, ঠান্ডাজনিত ভাইরাস জ্বর, পুরাতন রোগীদের পাশাপাশি নতুন রোগী আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়ায় দেখা দিয়ে এ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট, গত কয়েকদিন যাবৎ ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ও দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোর জরুরী বিভাগে সর্বাপেক্ষা ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। ছর্দি, কাশি, ভাইরাস জ্বরের জন্য জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিলেও, নিউমোনিয়া, হাপানি, ডায়রিয়ার রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হচ্ছে। চিকিৎসকরা আন্তরিকতার সাথে সেবা দিচ্ছেন। সেবিকাদের সেনা ও প্রশংসিত হচ্ছে। বিশেষ করে সদর হাসপাতালে আগত রোগীদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। গত দুই তিন দিন যাবৎ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল বহিঃবিভাগ পরিদর্শনে দেখা গেছে শীত বাহিত রোগে আক্রান্তরা চিকিৎসা নিচ্ছেন, শীতের সময় গুলোতে শীত বাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া অপেক্ষা প্রতিরোধ সতর্কতা গ্রহনের বিকল্প নেই। এ বিষয়ে দেবহাটার সখিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মেডিকেল অফিসার সাকিব হাসান বাঁধন দৃষ্টিপাতকে বলেন শীতের তীব্রতার অবশ্যই কুসুম গরম পানি পান ও গোসলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে ঠান্ডা হতে কিছুটা পরিত্রান পাওয়া সম্ভব। দিনের বেলাতে যেহেতু ঠান্ডা বাতাস বইছে বিধায় ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখাই উত্তম, শীতে সর্বাধিক আক্রান্ত হওয়ায় আশঙ্কা শিশু ও বয়স্কদের বিধায় শিশুদের গরম পোষাক পরিধান করানো সেই সাথে হাত মোজা ও পা মোজার ব্যবহার গুরুত্ব দিতে হবে। বয়স্কদেরকে ও অনুরুপ ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে। আমাদেরকে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে ঘুমের মধ্যে শিশুর শরীর থেকে কম্বল বা লেপ যেন সরে না যায়। সকালে কুয়াশায় ঘর থেকে জরুরী প্রয়োজন ব্যতিত বের না হওয়াই ভাল। এই চিকিৎসক আরও জানান আমরা প্রতিনিয়ত ঠান্ডা বাহিত রোগের চিকিৎসা দিচ্ছি অতি আন্তরিকতার সাথে। তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত কোন ঔষধ সেবন না করার আহবান জানান। সাতক্ষীরা শহর হতে শুরু করে গ্রামের ফান্সেীর দোকান গুলোতে অভিজ্ঞ রোগীরা ভিড় করছে এই সুযোগে কোন কোন ফার্মাসিস্ট নিজেরাই চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করে ঠান্ডা বাহিত রোগের ঔষধ দিচ্ছে যা রিতীমত উদ্বেগের কারনে পরিনত হয়েছে এমন মন্তব্য সচেতন মহলের। শীতের তীব্রতা আর কনকনে শীতের আবহে খেটে খাওয়া মানুষগুলো বিদপজনক পরিস্থিতির মুখে। দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমজীবীরা শীতের দাপটে খেত খামারে কাজ করতে পারছে না। দিনের দীর্ঘ সময় সূর্যের আলো না দেখতে পাওয়ায় অনেকে নাড়াপল জ্বালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছে। অতি শীত আর কুয়াশার কারনে সবিজ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটছে, বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। কৃষকদের কাছে জানতে চাইলে বলেন বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে যেন কুয়াশা ও শিশির বিন্দু বীজতলা স্পর্শ না করে। আবহাওয়া দপ্তর শীতের তীব্রতা আপাতত না কমারই আভাস দিয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। শীতের কল্যানে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর ন্যায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়ছে। কাজ না থাকায় আবার শীতের কারনে অনেকে হাট বাজারেও আসছে না যে কারনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বেচাকেনায় ভাটা পড়েছে। সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ এর জনবহুল ও কর্মব্যস্ত সড়ক পূর্বের ন্যায় যানবাহনের যেমন উপস্থিতি নেই অনুরুপ যাত্রী বাহিবাস, মহেন্দ্র গুলোতে যাত্রী সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। শীতের তীব্রতা হ্রাস পেলেই কেবল জনজীবনের স্বাভাবিকতা ফিরবে এমন প্রত্যাশা জনসাধারনের।