এফএনএস : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র হচ্ছে ওয়াসার পানির সঙ্কট। বিগত কয়েক দিন ধরেই মিরপুর, উত্তরার অনেক বাসিন্দা খাবার পানির অভাবে ভুগছে। পানি অবাবে সেখানে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ওয়াসার কর্মকর্তারাও পানি সঙ্কটের বিষয়টি স্বীকার করে জানিয়েছে, গরমে পানির ব্যবহার বেড়ে যাওয়া ও পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে পানি সঙ্কট তৈরি হয়েছে। পানি সঙ্কটের সমাধানে মিরপুর এলাকাবাসী ওয়াসা অফিস এবং উত্তরার আশকোনা এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি ওয়াসা অফিসে লিখিতভাবে পানি সঙ্কটের কথা জানানো হয়েছে। ওয়াশা এবং ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মিরপুর-১ এর পূর্ব আহমেদ নগর, জোনাকি রোড, ব্যাংক কলোনি, বায়তুল ইকরাম মসজিদ এলাকা, মনিপুরের কিছু অংশ এবং পীরের বাগের কিছু এলাকার বাসিন্দারা গত দু’সপ্তাহ ধরে তীব্র খাবার পানির সঙ্কটে ভুগছে। ওসব এলাকার বাসিন্দাদের ওয়াসার পানি না থাকায় শুধু খাবার পানির সঙ্কট নয়, গোসল, রান্নাসহ নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বায়তুল ইকরাম মসজিদে ১৫ দিনের বেশি ধরে পানি না থাকায় ওযু করতে মুসলিদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ওয়াসার বাংলা কলেজের পাশের জোন অফিসে গিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারপরও তার কোনো সুরাহা হয়নি। সূত্র জানায়, উত্তরা এলাকার ৪৯নং ওয়ার্ডের গাওয়াইর আশকোনা এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই পানি সঙ্কট বিরাজ করছে। তীব্র পানির সঙ্কট সমাধানে গত ১৯ মার্চ স্থানীয় এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ এবং পানি সরবরাহ বাড়ানোর দাবি জানায়। আশকোনা এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই পানি সঙ্কট চলছে। অথচ ওই এলাকায় পানির নতুন লাইন স্থাপন করা হচ্ছে। ওই দু’টি এলাকা ছাড়াও সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার থেকে যেসব এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয় সেসব এলাকায় পানি সঙ্কটের পাশাপাশি দুর্গন্ধও বেড়েছে। তাতে ওসব এলাকার বাসিন্দারা বেশ সঙ্কটে পড়েছে। যাত্রাবাড়ী, মুগদা, মানিকনগর, বাসাবো এলাকার বাসিন্দারা গত কয়েক দিন ধরেই পানি সঙ্কট ও দুর্গন্ধজনিত সমস্যায় ভুগছে। এদিকে এ বিষয়ে ওয়াসার স্থানীয় মডস জোনের-৪ নির্বাহী প্রকৌশলী ইকবাল আহমেদ মজুমদার জানান, গরম বেড়ে যাওয়ায় পানির চাহিদা বেড়েছে। তাছাড়া মিরপুর এলাকায় পাম্পের পানি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গরমের সময় পানির স্তর ২-৩ মিটার নিচে নেমে যাওয়ায় পানির উৎপাদন কমে গেছে। ওই কারণে কয়েকটি এলাকায় পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি সঙ্কটের বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) এ কে এম সহিদ উদ্দিন জানান, গরমের সময় পাানির স্তর দুই-তিন মিটার করে নিচে নেমে যায়। ওই কারণে যে পাম্পে দৈনিক আড়াই হাজার লিটার পানি উৎপাদন হতো সেখানে এখন ১৮ শ’ লিটার পানি উৎপাদন হচ্ছে। তাছাড়া কয়েক দিন ধরে গরম বেড়েছে। তাতে মানুষ বেশি পানি ব্যবহার করছে। অনেকে দিনে দুই তিনবারও গোসল করছে। যে কারণে লাইনের শুরুর দিকের বাড়িগুলোতে পানি থাকলেও একটু দূরে যারা আছে তাদের কাছে পানি ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে না। তাতে ওসব বাড়িগুলোতে পানি সঙ্কট হচ্ছে। তবে সঙ্কটের খবর পেলে ওয়াসার পক্ষ থেকে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।