শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:১৪ পূর্বাহ্ন

আরও ১৫ ইসরাইলি সেনা হত্যা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ গাজার রাফা শহরে চলছে গণহত্রা, দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা রাফার ঘরে ঘরে ঢুকে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে। এক দিকে গণহত্যা অন্যদিকে ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনিদেরকে গ্রেফতার করছে। আল জাজিরা টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে ইসরাইলি বাহিনী গ্রেফতারের পাশাপাশি ডলার সহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। একদিকে হামাস ইসরাইল যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে সমালোচনা চলছে। পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর খবরে বলা হচ্ছে যে কোন সময়ে যুদ্ধ বিরতির ঘোষনা আসতে পারে অন্যদিকে গাজায় চলছে ইসরাইলি বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা। আল জাজিরা টেলিভিশন ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চঞ্চাল্যকর খবর প্রকাশ করেছে। খবরটি হলো ইসরাইলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের উপর নির্মম নির্যাতন পরিচালনা করা হচ্ছে। বছরের পর বছর ইসরাইলের কারাগারে বন্দী থাকা ফিলিস্তিনিদের উপর শারিরীক নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিক নির্যাতন পরিচালনা করা হচ্ছে। আল জাজিরা টেলিভিশন আরও জানায় নারী এবং পুরুষ উভয় বন্দীদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনাও ঘটানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ইসরাইলি কারাগারে আটক থাকা অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদিকে গত দুই দিনে দখলদার বাহিনরি পনের সেনাকে হত্যা করেছে হামাস যোদ্ধারা। অব্যাহত ভাবে ফিলিস্তিনিদের কে হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে আসলেও গাজায় কোন অবস্থাতেই দখলদার বাহিনী যে স্বস্তিতে নেই তার বড় প্রমান প্রতিনিয়ত হামাস যোদ্ধাদের হাতে দখলদার বাহিনীর সদস্যদের হতাহতের ঘটনা। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেড গতকাল জানিয়েছে আমাদের যোদ্ধারা দখলদার বাহিনীর সদস্যদের পনের জনকে হত্যা করেছে এবং অত্যন্ত নিকটবর্তী এলাকা হতে তাদের উপর হামলা পরিচালনা করা হয়। আল কাসেমের মুখপাত্র আবু ওবায়দা আরও বলেছেন, গত কয়েকদিনে হামাস যোদ্ধারা ইসরাইল বাহিনীর তেতাল্লিশটি সামরিক যান পুরোপুরি অথবা আংশিক সেনা কর্মকর্তা মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছে এবং হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলি বাহিনীর চারটি ড্রোন জব্দ করেছে। দৃশ্যতঃ হামাস যোদ্ধারা গত চারমাস যাবৎ প্রতিরোধ হামলার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালিয়ে আসছে। দখলদার বাহিনীর সদস্যরা গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে যে ভাবে নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন ও মানবতা হত্যা চালিয়েছে অতীতে এমন বিভৎস্য ঘটনা কোন এলাকাতে ঘটেনি। গত কয়েকদিন যাবৎ রাফা শহরে যে ভাবে আক্রমন ও বিমান হামলা শুরু করেছে দখলদার বাহিনী তা কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে রাফা শহর পুরোপুরি ধ্বংস স্তুপে পরিনত হবে। এদিকে হামাস ইসরাইল চুক্তি তথা যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে আবারও হামাসের পক্ষ থেকে না বলা হয়েছে। এ চুক্তির বিষয়ে হামাস যোদ্ধারা কঠোর বার্তা দিয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা টেলিভিশন। চ্যানেলটি বলেছে হামাস এর পক্ষ হতে বলা হয়েছে প্রথমেই ইসরাইলকে গাজায় হামলা বন্ধ করতে হবে এবং ইসরাইলের সেনাদেরকে গাজার সর্বত্র হতে প্রত্যাহার করতে হবে তবেই না যুদ্ধ বিরতি ও বন্দী বিনিময় নিয়ে আলোচনা হবে। গতকাল হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এমনই বার্তা দিয়েছে তবে হামাসের পক্ষ হতে আরও বলা হয়েছে আমরা চুক্তিকে পুরোপুরি বাতিল যেমন করেনি অনুরুপ অনুমোদন ও করেনি, নিজেদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করে চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন। এদিকে ইসরাইলের ভাষ্য তাদের এক শত জিম্মির মুক্তির দুই মাস যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব কার্যকর করবে। গতকাল পশ্চিমা মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে ইসরাইলের মন্ত্রীসভার বৈঠকে গাজা যুদ্ধ নিয়েও যুদ্ধ বিরতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছে গাজা যুদ্ধে ইসরাইল সফল হবেই। যতক্ষন না পর্যন্ত ইসরাইলের সেনারা সাফল্য অর্জন না করবে এবং হামাস যোদ্ধারা নির্মূল না হবে ততোক্ষণ পর্যন্ত ইসরাইলের সেনারা লড়াই চালিয়ে যাবে। এদিকে গতকাল দিন ব্যাপী ইসরাইলি সেনাদের হামলায় অন্তত দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরাইলের বিভিন্ন এলাকাতে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। দখলদার বাহিনীর সদস্যরা ইতিপূর্বে লেবাননেও একাধিক বারই ক্ষেপনাস্ত্র হামলা পরিচালনা করেছে। আল জাজিরার আরেক খবরে বলা হয়েছে হিজবুল্লাহ ও হামাস যোদ্ধারা যৌথ ভাবে ইসরাইলের অভ্যন্তরে রকেট হামলা পরিচালনা করেছে। ইসরাইলে জিম্মিদের মুক্তির দাবীর ও মুক্তি করতে ব্যর্থ হওয়ায় গতকালও ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিব সহ বিভিন্ন এলাকাতে বিক্ষোভ করেছে। হাজার হাজার ইসরাইলি উক্ত বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। দেশটির পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভ কারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ইসরাইলি সংশ্লিষ্ট জাহাজে হুতি যোদ্ধাদের হামলা চলছে তো চলছেই থেমে নেই তাদের হামলা প্রতিদিনই হামলার শিকার হচ্ছে পশ্চিমা জাহাজগুলো হুতিদের বক্তব্য ইসরাইল গাজায় হামলা বন্ধ করলে তবেই তারা জাহাজ হামলা ও আটক বন্ধ করবে। এদিকে হুতিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনকে কড়া হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেছে আর যদি তারা হামরা করে তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও বৃটেনে হুতি যোদ্ধারা হামরা করতে বাধ্য হবে। গাজার বিভিন্ন এলাকাতে ফিলিস্তিনি তথা হামাস সমর্থিত সরকার কাজ শুরু করে। পুলিশ সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষা সহ পালিয়ে যাওয়া, হত্যার শিকার হওয়া ফিলিস্তিনিদের সম্পদ প্রহরা দিচ্ছে এবং পুনঃগঠনে অংশ নিচ্ছে। সারা গাজা ক্ষুধার নগরীতে পরিনত হয়েছে। এখানে ওখানে লাশ, নেই সুপেয় পানি। জাতিসংঘ অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বিরতি ও হামলা বন্ধের আহবান জানিয়েছে। গাজায় ক্ষুধা এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে সমগ্র গাজা যেন দূর্ভিক্ষে জর্জরিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com