দেশের বিভিন্ন বাজারে চাহিদা মেটাচ্ছে ঃ অর্থনীতিতে বইছে সুবাতাস
দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ সাতক্ষীরায় সাদা মাছ চাষে বিপ্লব ঘটেছে। অর্থনীতিতে সুবাতাস বইছে। আর এ সাদা প্রজাতির মাছ চাষ মিঠা পানি প্রবাহ হতে বিস্তৃত ঘটে লবনাক্ত চিংড়ী ঘেরকে উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে পরিগনিত হতো। সাতক্ষীরায় চিংড়ী শিল্পের জন্য বিশেষ সুনাম এবং সুখ্যাতি থাকলেও সাম্প্রতিক বছর গুলোতে সাতক্ষীরায় সাদা মাছ রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন হাটবাজারের চাহিদা পুরন করছে। রুই, মৃৃগেল, কাতলা, ট্যাবলেট, সিলবারকাপ, মিনার কাপ সহ বিভিন্ন ধরনের মাছ কয়েক বছর পূর্বেও বসতবাড়ী সংলগ্ন পুকুরে পারিবারীক প্রয়োজনে, আতিথেয়তার কল্যানে চাষ করা হতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আর বাস্তবতার নিরিখে সাদা মাছ চাষের ক্ষেত্র এতটুকু বিস্তৃত ঘটেছে যে এবং অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে যে কারনে দিনে দিনে এই চাষে অধিকতর আগ্রহী হচ্ছে চাষীরা। সাতক্ষীরায় চাষ মাছ উৎপাদনের প্রাথমিক মাধ্যম রেনু পোনাও উৎপাদন হচ্ছে। বছর কয়েক পূর্বে জেলার কলারোয়া উপজেলা দৃশ্যতঃ সাদা মাছের রেনু উৎপাদন করা হতো এবং উক্ত রেনু সাতক্ষীলার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হতো, কিন্তু বর্তমান সময়ে জেলার কলারোয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলার চাষীরা রেনু উৎপাদন করা হতো এবং উক্ত রেনু সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে জেলার কলারোয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলার চাষীরা রেনু উৎপাদন করছে। যে কারনে সাদা মাছ চাষে খরচ কম হচ্ছে এবং উৎপাদন অধিক হচ্ছে। এক বিঘা, দুই বিঘা হতে শুরু করে দশ বিঘা পর্যন্ত ঘেরে ও জলাশয়ে রেনু পোনা অবমুক্ত করার পর চালাই (চাষীদের ভাষায়) হাল দশটা, পনেরটা কেজি তারপর বড় মাছ উৎপাদন কারী তথা চাষীরা সংগ্রহ পরবর্তি জলাশয়, পুকুর ও চিংড়ী ঘেরে অবমুক্ত করে তিন/চার মাষের ব্যবধানে কেজি কেজি বা তারও বেশী ওজন হয়। সাতক্ষীরায় সাদা মাছ চাষে বিশষ বিপ্লব ঘটার অন্যতম কারন জেলার হাজার হাজার লবনাক্ত চিংড়ী ঘেরগুলো সাদা মাছ উৎপাদনের মহাক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে। সাধারনত লবনাক্ত পানিতে রুই, মৃগেল, কাতলা, চিতল, সিলবারকাপ সহ এই প্রকৃতির মাছ উৎপাদনের সুযোগ থাকে না, লবনাক্ততার কল্যানে মৃত্যু বরন করে। কিন্তু তারপরও লবনাক্ত চিংড়ী ঘেরে সাদা মাছের সোনা ফলছে এভাবেই আষাঢ় শ্রাবন মাসের বৃষ্টির পানির কল্যানে ঘেরের লবনাক্ত পানি দুধ লবন হয় অর্থাৎ সহনীয় লবনাক্ততায় পরিনত হয় যা অতি সহজেই সাদা প্রকৃতির মাছ নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারে। তিন/চার মাসের মধ্যে উক্ত মাছ ধরার ও বাজারজাত করনের সুযোগ সৃষ্টি করে। উৎপাদিত মাছের পাশাপাশি প্রকৃতিগত ভাবে অথবা একটি দুইটি বীজ বা মা মাছ ছাড়লে সেই থেকে অজস্র মাছের সৃষ্টি হয় এবং উৎপাদন ও অর্থনৈতিক মুল্য অধিকতর হয়। বিশেষ করে তেলাপিয়া, টেংরা, পারশে, খরখুল্লা, ভেটকি নাইলোটিকা প্রভৃতি। এসকল মাছ সামান্য অবমুক্ত অথবা লবনাক্ত পানির জোয়ারের সাথে ঘেরের অভ্যন্তরে ডিম অনুপ্রবেশ করে। ইতিপূর্বে চিংড়ীর কল্যানে জাতীয় অর্থনীতিত সুসংহত হতো, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হতো স্থানীয় অর্থনিিততে সুবাতাস বইতো। কিন্তু বাস্তবতা হলো সাদা মাছের কল্যানে সাতক্ষীরার অর্থনীতি সুসংহত হচ্ছে। স্থানীয় অর্থনীতিতে সুবাতাস বইছে। যার প্রভাব জাতীয় অর্থনীতিতে বইছে। সাতক্ষীরার বিপুল সংখ্যক মানুষ সাদা মাছ চাষে ও সাদা প্রজাতির মাছ ব্যবসায় নিয়োজিত। সাদা মাছের ব্যবসার ক্ষেত্র এতটুকু সম্প্রসারিত হয়েছে যে জেলার বিভিন্ন হাট বাজার মৎস্য সেট এমনকি ঘেরগুলো হতে অক্সিজেন সমৃদ্ধ গাড়ীতে জীবন্ত মাছ সংগ্রহ করে তা বৈধ পথে প্রতিবেশি দেশের বাজারে জীবনন্তঅবস্থায় পৌছানো হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, ময়মনসিংহ সহ প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সাতক্ষীরার সাদা মাছ সেই সকল এলাকার চাহিদা মেটাচ্ছে। বিশেষ ভাবে আলোচিত, আলোকিত হচ্ছে সাতক্ষীরাা।