দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইলি বাহিনী রাফায় গণহত্যা পরিচালনার পাশাপাশি পশ্চিম তীরে ব্যাপক ভিত্তিক নৃশংষতা পরিচালনা করছে। গতকাল গাজার বিভিন্ন এলাকাতে দখলদার বাহিনীর বিমান ও স্থল হামলায় অন্তত দুই শতাধীক নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। গতকাল দখলদার ইসরাইলি বাহিনী এক সাথে রাফার চারদিক থেকে হামলা শুরু করলে সাধারন মানুষের মাঝে মৃত্যু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গতকালই একশত ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। এদিকে ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা গাজার একাধিক ব্যাংক লুট করেছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার অর্থ মন্তণালয় জানিয়েছে দখলদার বাহিনীর সদস্যরা অন্ততঃ পনের বিলিয়ন মার্কিন ডলার লুট করে নিয়েগেছে। বরাবরই গাজা অর্থনীতিতে বিশেষ ও কাঙ্খিত ভূমিকা রক্ষা কারি উপত্যকা হিসেবে পরিচিত। ফিলিস্তিনিদের জমানো অর্থ ব্যাংক গুলোতে রক্ষিত ছিল। দখলদার বাহিনী ব্যাংক থেকে শুধু মার্কিন ডলার লুট করেই থেমে থাকেনি তারা একাধিক ব্যাংক ধ্বংস করেছে। হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড গতকাল তাদের টেলিগ্রাফ পোস্টে জানিয়েছে রাফায় দখলদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করছে হামাস যোদ্ধারা। আমাদের যোদ্ধাদের একটাই কথা হয় মারবো নতুবা মরবো। এদিকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী দাবী করেছে পশ্চিমে গাজার একটি সুরক্ষিত সুড়ঙ্গে আমাদের সেনারা অভিযান চালিয়ে কযেকজন কমান্ডারকে হত্যা করেছে এবং দুই ইসরাইলি পন বন্দীকে মুক্ত করেছে। ইসরাইলি বাহিনীর এমন বক্তব্যকে সমর্থন বা স্বীকার করেনি হামাস। হামাস যোদ্ধাদের দাবী ইসরাইলি বাহিনী আমাদের যোদ্ধাদের মনোবল ভেঙ্গে দিতে বিভিন্ন ধরনের অসত্য তথ্য সরবরাহ করছে আর কোন ভিত্তি নেই। এদিকে গতকালও রাফা ও পশ্চিম গাজা এলাকাতে ইসরাইলি বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে হত্যার পাশাপাশি অন্তত দুই শতাধীক ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে। দখলদার বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ঘরে ঘরে তল্লাশী অভিযান চালিয়েছে। গতকাল পশ্চিমতীরেও দখলদার বাহিনী হামাস সদস্যদের দ্বারা চরম প্রতিরোধ হামলার মুখে পড়ে। ইসরাইল সেনা প্রধান প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছে যে কোন অবস্থাতেই হামাস সন্ত্রাসীদেরকে জীবিত রাখা হবে না। ইসরাইলের সেনা প্রধানরে এই বক্তব্য প্রমান করে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী দৃশ্যতঃ ফিলিস্তিনিদেরকেই নির্মূল করতে চাইছে। ফিলিস্তিনিীদের মৃত্যু আতঙ্ক প্রতিনিয়ত তাড়িত করছে। গত সপ্তাহ ব্যাপী রাফা হতে দলে দলে ফিলিস্তিনিরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটছে তো ছুটছেই। মৃত্য আতঙ্কের পাশাপাশি খাদ্য অভাব পুরো রাফা বাসিকে দুর্ভিক্ষের দোরগোড়ায় নিয়েছে। ইতিহাসের অন্ধকারাচ্ছন্ন ও কঠিন পথ পাড়ি দিচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। বর্তমান এই অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই ফিলিস্তিনি নামক জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব থাকবে না। ইসরাইল সেনারা গাজায় প্রবেশরত ত্রান বাহি যানবাহন আটকিয়ে দিচ্ছে। এদিকে ইসরাইলের গণহত্যা এবং যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা অব্যাহত আছে। গতকাল ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ হতে বলা হয়েছে কোন অবস্থাতেই ইসরাইলের বেসামরিক নাগরিক হত্যাকে বৈধতা দেওয়া যায় না। সৌদি আরব ফিলিস্তিনিকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায় আর যখন ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র হবে তখনই কেবল সৌদি আরব ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে। হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা গতকালও ইসরাইলের সীমান্ত সংরগ্ন গ্রাম গুলোতে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালিয়েছে প্রতি উত্তরে ইসরাইর ও একাদিক ক্ষেপনাস্ত্র লেবাননে নিক্ষেপ করেছে। এদিকে হুতি যোদ্ধাদের লোহিত ও ভূ-মধ্যসাগরের অবস্থান অব্যাহত আছে। ইসরাইলের হামলায় গত পাঁচ মাসে আঠাশ হাজার ফিলিস্তিনি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরে বিক্ষোভ থেমে নেই। গতকালও রাজধানী তেল আবিব সহ বড় বড় শহর গুলোতে ইসরাইলিরা বিক্ষোভ করেছে।