কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি \ ‘মার্চ মাস বাঙালি জাতির জন্য গর্বের মাস, স্মরণীয় মাস। এ মাসেই বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়। আর এ মাসেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পথ সুগম করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন রাষ্ট্রে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি, শিক্ষাদিক্ষাসহ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।’ বৃহষ্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা চত্ত¡রে ‘স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ : বঙ্গবন্ধু হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষক’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পলী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ আন্দোলনের পর বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধাবিত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমরা স্বল্পোন্নত দেশে এগিয়ে যাচ্ছি, ৪১’সালে আমরা উন্নত দেশ হবো। শিক্ষা, মাথাপিচু আয়সহ অনেক সূচকে অনেক ভালো অবস্থানে আছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শতভাগ বিদ্যুতায়নে যুগান্তকারী ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুত উৎপাদনে আগামি ৪ বছর পর দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার মধ্যে আমরা সব থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন রাষ্ট্রে পরিণত হবো। রাস্তাঘাট তৈরি, বিনা পয়সায় ছাত্র-ছাত্রীদের বই প্রদান, খাদ্য, কৃষি বিপ্লবসহ ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।’ কলারোয়ার স্মৃতিচারণ করে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপি বলেন, কলারোয়া আমার প্রিয় জায়গা, ‘১৯৮৭-৮৮ সালে প্রায় ৪বছর আমি মোটরসাইকেল চালিয়ে আমি এখানে ইরিগ্রেশনের কাজ করতাম। তুলশীডাঙ্গা ফুড গোডাউন, সাতক্ষীরা জেলখানা আমার তৈরি করা। বিএম নজরুল ভাইয়ের ইটের ভাটা, গোলাম রব্বানী সাহেবের ইটের ভাটা থেকে প্রচুর পরিমানে ইট নিতাম। আমি যাওয়ার সময় আমার যে গাড়িখানা ছিলো সেটা নজরুল ভাইয়ের কাছে দিয়ে ইটের টাকা শোধ করে দিয়ে চলে যাই। কাজেই এখানেই অনেকে ছিলেন অধ্যাপক ফারুক, হোসেন চেয়ারম্যান, শহিদুল ইসলাম, বনি আমিন অনেকের সাথে আমার পরিচয়। এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে আমি যাইনি। কলারোয়ার কথা বললে আমার মন দুর্বল হয়, মন উৎফুলহ হয়ে ওঠে। দীর্ঘদিন কলারোয়ায় বিচরণের কারণে বহু মানুষের সাথে আমার পরিচয় আছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর অশোক কুমার। এর আগে শিক্ষার্থীরা সম্মিলিত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। পরে উপজেলার সীমান্তবর্তী কেঁড়াগাছিতে নামাচার্য শ্রীশ্রী ব্র² হরিদাস ঠাকুরের জন্মভিটা আশ্রমে আয়োজিত ৫ম দোলযাত্রায় ৪দিনব্যাপী বার্ষিক ধর্মীয় উৎসবে যোগ দেন স্থানীয় সরকার, পলী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপি। সেখানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। বিশ্ব শান্তি ও মানব কল্যাণে ব্র² হরিদাস ঠাকুরের জন্মভিটা আশ্রমের ধর্মীয় আয়োজন ভৌগলিক সীমা অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রূপ নিয়েছে। তীর্থ স্থানে পরিণত হয়েছে। উভয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপির স্ত্রী বিশিষ্ট নারী সংগঠক তন্দ্রা ভট্টাচার্য, সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মুস্তফা লুৎফুলাহ, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব বিএম নজরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল আমীন হোসেন, তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল মোহাম্মদ আল মাহমুদ, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান, কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গোলাম মোস্তফা, উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান-ঐক্য পরিষদের সভাপতি সিদ্ধেশ্বর চক্রবর্তী, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মনোরঞ্জন সাহা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিল, সাবেক চেয়ারম্যান ভূট্টোলাল গাইনসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও অসংখ্য ভক্তবৃন্দ। কেঁড়াগাছির অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন কেঁড়াগাছিতে নামাচার্য শ্রীশ্রী ব্র² হরিদাস ঠাকুরের জন্মভিটা আশ্রম পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক কার্তিক চন্দ্র মিত্র ও সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ রায়। এদিকে আলোচনা সভা ছাড়াও ৪দিনব্যাপী ধর্মীয় ওই অনুষ্ঠানে ভগবত আলোচনা, পদাবলী কীর্তন, ভজন কীর্তন, বাউল সঙ্গীত ও লোক সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।