বেড়েছে অর্থনৈতিক গুরুত্ব ঃ গাছে গাছে সৌন্দর্যে ভরা মুকুল
দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ আমাদের দেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় ফল আম এই ফলকে সব ফলের সেরা বা রাজা ও বলা হয়। একদা পারিবারীক প্রয়োজনে আথিথেয়তায় আম ভূমিকা রাখলে সময়ের পরিবর্তনে আম বর্তমান সময় অর্থনীতিতে কাঙ্খিত ভূমিকা রাখছে এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব বেড়েছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আম উৎপাদন ও চাষ হচ্ছে। দেশের অন্যতম আম উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে সাতক্ষীরার সুনাম এবং সুখ্যাতি যেমন অনুুরুপ ভাবে এই জেলার আম স্বুসাদু বটে। আসন্ন আম মৌসুমের পূর্বে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে মুকুল বা ফুল সহনীয় ভাষায় যাকে বলা হয় বোল। গাছে মুুকল আসা এবং আমের গুটি তৈরী হওয়ার মুহুর্ত গুলো অত্যন্ত গুুত্বপূর্ণ এই সময়ে বিশেষ পরিচর্যা নেওয়া না হলে যথাযথ আমি উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা অমুলক নয়। সঠিক আর সময়মত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে আম উৎপাদন মারাত্মক ভাবে হ্রাস পেতে পারে অর্থনীতিতে বিশেষ ক্ষতির মুখে নেবে। গত কয়েকদিন যাবৎ সাতক্ষীরার একাধিক আম বাগান পরিদর্শন করে দেখা গেছে আম চাষীরা বাগান পরিচর্যায় নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছেন। দেবহাটা এলাকার আম চাষী মোহাম্মদ আলী জানায় বোল আসার পরের পরিচর্যা অপেক্ষা অধিকতর বোল অর্থাৎ মুকুল আসতে বিশেষ পরিচর্যা নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান আগষ্ট, সেপ্টম্বর মাসের মধ্যে আম গাছের রোগাক্রান্ত মরা ডালপালা, শাখা প্রশাখা কাটা হয়, এবং গাছ যেন পর্যাপ্ত আলো বাতাস এবং যথাযথ পানি পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ডিসেম্বর জানুয়ারী মাসে কীটপতঙ্গ নিধন ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে গাছকে জীবানু ও পোকামাকড় মুক্ত করা হয়। বর্তমানে গাছে গাছে আসা মুকুল ফুলফোটার পূর্বে একথেকে দেড় ইঞ্চি লম্বা মুকুল হলে আমের হপার পোকা দমনে মেডিসিন ¯েপ্র করা হয় যা বর্তমানে চলমান, এই মাসের শেষে এবং আগামী মাসের মধ্যে সময়ের মধ্যে গাছে গাছে আমের গুটি আসলে আমের ছত্রাক জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে থাকে পাউডারি মিলডিউ রোগ বলা হয়। গুটির আশপাশে পাউডারের গুড়ার মত আবৃত দেখা যায় যা আমের গুটিকে চেকে রাখে এবং আম গুটি ঝরে পড়ে উক্ত রোগ প্রতিরোধেও ঔষধ ব্যবহার করা হয়। সাতক্ষীরার বিভিন্ন আম বাগান পরিদর্শনে দেখা গেছে এবার গাছে ব্যাপক মুকুল। গত এক মাস পূর্বে বৃষ্টির কারনে বহু গাছে কিছুটা দেরীতে মুকুল এসেছে। আম চাষীদের আশঙ্কা ছিল হয়ত মুকুল আসবে না কিন্তু মুকুল বিহীন গাছ কমই দেখা যাচ্ছে। সাতক্ষীরার আম রাজধানী ঢাকার বাজারে বিশেষ চাহিদার ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সর্বাপেক্ষা সুখ আর স্বস্তির বিষয় এই জেলার আম দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্ব বাজারে পৌছেছে। জাতীয় অর্থনীতিতে কাঙ্খিত ভূমিকা রেখে চলেছে। জেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ আম চাষ ও আম ব্যবসার সাথে নিজেদেরকে সংযোগ ঘটিয়েছে এবং জীবন জীবিকার মাধ্যম হিসেবে আম চাষ ও ব্যবসাকে বেছে নিয়েছে। রাজধানী ডাকা সহ ভিন্ন জেলা হতে বিনিয়োগকারীরা জেলার সদর উপজেলা, দেবহাটা, কালিগঞ্জ এলাকায় বিনিয়োগ করেছে। রাজধানী ঢাকার ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন আম বাগানে মৌসুম চুক্তিতে আম বাগান ক্রয় করে আম উৎপাদনে নেমেছে। আবার রাজধানী ঢাকা সহ অন্যান্য বড়; বড় শহরের আম আড়ৎদারদের থেকে দাদন হিসেবে টাকা নিয়ে স্থানীয়রা আম চাষ করছে। শর্ত উৎপাদিত আম তাদের পাইকারী আড়তে নিতে হবে। দৃশ্যতঃ সাতক্ষীরায় বানিজ্যিক ভিত্তিতেই কেবল আম চাষ হচ্ছে তা নয় আম উৎপাদনে বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে। আমের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক মুল বৃদ্ধি পাওয়ায় যার বাড়ীতে সামান্য ফাঁকা যায়গা আছে সেখানেই আম গাছ রোপন করছে। অর্থনীতিতে সুবাতাসের ক্ষেত্র আম চাষীদেরকে বর্তমান সময়ে যেমন ব্যস্ততম সময় যাচ্ছে পাশাপাশি এই সময়গুলো অতি গুরুত্বপুর্ণ গাছের পরিচর্যার সামান্যতম ঘাটতি হলে আম উৎপাদনে ছন্দ পতন ঘটবে। আর তাই আম চাষীদের অতি ব্যস্ততা আম বাগান নিয়ে।