দৃষ্টিপাত ডেস্ক॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনী পবিত্র রোজার দিন গুলোতে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং প্রতিদিনই রোজাদার ফিলিস্তিনিরা হত্যাকান্ডের মুখে পতিত হচ্ছে। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অভূক্ত থেকে রোজা রাখছে তাদের সামনে বর্তমান সময়ে মৃত্যু অভূক্ত থাকা ব্যতিত অন্য কোন পথ নেই। এর মধ্যে দখলদার বাহিনীর সাথে হামাস প্রতিনিধিদের যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে আলোচনা শুরু হতে চলেছে বলে জানাগেছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরা জানিয়েছে আজ সোমবার আলোচনা শুরুহতে পারে। আল জাজিরা টেলিভিশন মধ্যস্থতাকারী দেশমিশরের একাধিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে যে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে দেশটির গুপ্তচর মোসাদের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিনিধি দলকে মিশরে পাঠিয়েছে। উক্ত আলোচনায় মিশরও কাতারের পাশাপাশি হামাস মোসাদ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। হামাসের পক্ষ হতে যুদ্ধ বিরতির চুক্তিতে বলা হয়েছে চল্লিশ দিনের যুদ্ধ বিরতিতে ইসরাইলের কারাগারে বন্দীতিন শতাধীক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে হবে পক্ষান্তরে তারা তাদের হাতে ইসরাইলি পনবন্দী পয়ত্রিশ জনকে মুক্তি দিবে। হামাসের সর্বশেষ প্রস্তাবে ও ইসরাইলি প্রধান মন্ত্রী তথা যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভা অনুমোদন করেনি। ইসরাইলের অনমনীয় মনোভাব এবং সামরিক শক্তির কারনে ইসরাইলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনিদেরকে সামান্যতম সুযোগ দিতে নারাজ, তারা মুহুর মুহুর বিমান হামলায় মধ্য দিয়ে বারবার প্রমান করতে চাইছে যে ফিলিস্তিনিরা তাদের হত্যা ফসল, এদিকে আল জাজিরা আরও একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ খবর দিয়েছে তাদের প্রকাশিত ও প্রচারিত খবরেবলা হয়েছে ইসরাইলের যুদ্ধ কালিন মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যে রাফায় সামরিক অভিযান পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে। এমনিতেই অন্তত মাস ব্যাপী রাফায় দখলদার বাহিনী বর্বর হামলা চালিয়ে আসছে এবং উক্ত হামলায় ইতিমধ্যে রাফার হাজার হাজার অধিবাসি নিহত হয়েছে এবং কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি গৃহহীন হয়ে পড়েছে। রাফার বসতবাড়ীর ধ্বংস স্তুপের সাথে নিহত ফিলিস্তিনিদের লাশ দেখা যাচ্ছে। সমৃদ্ধশালী এই রাফা শহর ফিলিস্তিনিদের ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে বিবেচিত হলেও বর্তমান সময় গুলোতে রাফা মৃত্যুকুপে পরিনত হয়েছে। গত কয়েকদিন যাবৎ রাফা শহরের সর্বত্র বিমান হামলার পাশাপাশি চলছে গ্রেফতার অভিযান। সেই সাথে বসতবাড়ীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে দখলদার বাহিনীর সদস্যরা ডলারসহ মূল্যবান সামগ্রী লূটপাট করছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রীত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে অন্যান্য বারের রোজা আর বর্তমান রোজা গাজা বাসিরজন্য ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা এবং নিশ্চিত অভিশাপ। ফিলিস্তিনিরা রোজা পালনের জন্য যে টুকু খাদ্য পাওয়ার কথা তা পাচ্ছে না। অন্যদিকে প্রতি মুহুর্তে মৃত্যু আতঙ্ক ফিলিস্তিনিদেরকে তাড়িত করে চলেছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রীত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে উপত্যকার হাসপাতাল গুলো অধিকাংশ বিমান হামলার মাধ্যমে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে কোন ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত নয় হাসপাতাল গুলো। খান ইউনিসের বিখ্যাত হাসপাতাল আল আকসা ও রাফা শহরের আল নাসের হাসপাতাল অতীত সোনালীস্মৃতি হিসেবে বর্তমানে তাদের ক্ষমতাকে জানান দিচ্ছে। গাজার পশ্চিমাঞ্চলে ও দক্ষিনের জনপদে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী নতুন ভাবে বিমান হামলা শুরু করেছে। মধ্যগাজায় কয়েকদিন অভিযান বন্ধ রাখলেও আবারও অভিযান শুরু করেছে। হামাসের নিজস্ব টেলিগ্রাফ বার্তায় সাংগঠনটির মুখপাত্র আবু ওরাইদা বলেছেন আমাদের যোদ্ধারা রোজা পালন করেও দখলদার ইসরাইলি বাহিনীকে প্রতিরোধ হামলা চালিয়েছে। এদিকে হুতি যোদ্ধারা ঘোষনা দিয়েছে যে তারা হামাসকে সঙ্গী করে ঐক্যবদ্ধ হামলা পরিচালনা করবে ইসরাইলে। গতকালও ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে হুতি ও হামাসের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে অধিবাসিদের সতর্ক করনে সাইরেন বাজায়। গাজায় সাগর পথে আসা খাদ্য সামগ্রী খালাস করার ক্ষেত্রে দখলদার বাহিনী কোন ধরনের বাঁধা প্রদান না করলেও খাদ্যবাহী জাহাজ গাজা ভূ-খন্ডে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করছে। গতকালও অভূক্ত ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বারবার যুদ্ধ বিরতির উপর জোর দিলেও গতকাল পর্যন্ত দখলদার বাহিনী যুদ্ধ বিরতির ঘোষনা প্রদান করেনি।