দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ দখলদার আর অমানবিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ইসরাইলের ভু-খন্ডে হামলা চালিয়েছে ইরান। এই হামলা রীতিমত ভয়ঙ্কর এবং নজির বিহীন। শনিবার মধ্য রাতে ইরান ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন হামলা পরিচালনা করে এবং একই সাথে ক্ষেপনাস্ত্র হামলাও চালিয়েছে ইরান। ইসরাইলের ইতিহাসে অর্থাৎ ইসরাইল নামক রাষ্ট্রটি বারবার আগ্রাসী ভূমিকা পালন করে চলেছে এবং হত্যাযজ্ঞ তথা গণহত্যা পরিচালনা করে আসছে। ইরানের সেনা কর্মকর্তাদেরকে হত্যা করেছে সর্বশেষ সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানী দূতাবাসে ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়ে তার একাধিক সামরিক কমান্ডারকে হত্যা করলে ইরান প্রতিশোধের হুমকি দেয়। একই সাথে ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্ব সংস্থা গুলোকে ইসরাইলে হামলা পরিচালনার মাধ্যমে তার সেনা কর্মকর্তা হত্যার প্রতিশোধ গ্রহনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে। ঈদের নামাজে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়তুল্লাহ আল খোমেনী বন্দুক হাতে নিয়ে ঈদের নামাজের খুতবা দেন। ইসরাইল ইরানের হামলার মোকাবিলায় ব্যাপক ও বিস্তৃত প্রস্তুতি গ্রহন করে। দেশটির আকাশ পথ বন্ধ করে সেনা বাহীনিতে কর্মরত সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যদের ছুটি বাতিল করে। এক কথায় সামরিক শক্তিতে বালিয়ান এবং অনেকটা অপ্রতিরোধ্য ইসরাইল এর বিশ্বাস ছিল ইরান হুমকি প্রদান করলেও হামলা করার সাহস দেখাবে না। কিন্তু ইরানের ঘোষনা ইরান সত্য প্রমান করলো ইসরাইলে হামলার মধ্য দিয়ে। শনিবার মধ্য রাতে ইতিহাসের ভয়াবহ এবং নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ইসরাইলের দীর্ঘদিনের অহংকার, সম্মান আর মর্যাদাকে ভূলণ্ঠিত করলো ইরান। সম্প্রতি আগ্রাসনবাদী ইসরাইল সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে যে বিমান ঘাটি হতে বিমান হামলা চালিয়েছিলো এবং ইসরাইলের যে গোয়েন্দা সংস্থাটি উক্ত হামলার সাথে জড়িত উক্ত গোয়েন্দা সংস্থায় হামলা পরিচালনা করে। ইরানের পক্ষ হতে বলা হয়েছে ইসরাইলের হামলা করা কার্যকর ছিল। ইরানের অস্তিত্ব রক্ষায় এই হামলার বিকল্প ছিল না। ইরানের পক্ষ হতে আরও বলা হয়েছে ইসরাইল হামলা ছিল ইরানের সক্ষমতা হতে অতি সামান্য। আপাতত হামলা হতে বিরত থাকবে ইরান। তবে ইসরাইল যদি ইরানের মাটিতে হামলা করে তাহলে ইরান কোন অবস্থাতেই ছাড় দেবে না। পশ্চিমা মিডিয়ার খবের বলা হয়েছে ইরান ইসরাইলের ভূ-খন্ডে তিন শতাধিক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ড্রোন হামলা চালিয়েছে এবং দুই শতাধীক ক্ষেপনাস্ত্র হামলা ও করেছে ইরান প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইরানের ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপনাস্ত্রের অনেকগুলোকে মাঝ আকাশে অকার্যকর অথবা ভুপাতিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য, জার্মানী ও ফ্রান্স। এদিকে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভা ঘোষনা করেছে যে ইসরাইল অবশ্যই ইরানের ভূ-খন্ডে হামলা পরিচালনা করবে। অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পাল্টা হামলাকে সমর্থন না করে বলেছে ইসরাইল যদি ইরানের ভূ-খন্ডে হামলা পরিচালনা করে তাহলে উক্ত হামলার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট থাকবে না। পশ্চিমা মিডিয়া, রয়টার্স ও এএফপি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, ইসরাইল ইরানের পারমানবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছে। এদিকে ইসরাইলি সেনারা গাজা উপত্যকাতেও বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মুখে এমন কোন দিন নেই, এমন কোন সময় নেই যে দিনে বা সময়ে গাজা উপত্যকাতে দখলদার ইসরাইলী বাহিনী হামাস যোদ্ধাদের দ্বারা প্রতিরোধ হামলার মুখে পড়ছে না। হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি ও বন্দী বিনিময় আলোচনা চলছে। মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যম কে জানিয়েছে কোন অবস্থাতেই গাজা হতে সৈন্য প্রত্যাহারে ব্যতিত হামাস যুদ্ধ বিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তিতে যাবে না এবং এমনও ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইলকে লিখিত দিতে হবে যে তারা গাজা হতে সেনা প্রত্যাহার করবে। হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার তিন পুত্র ও নাতনিকে ঈদের দিনে বিমান হামলার মাধ্যমে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। হামাস প্রধান তার সন্তানদের হত্যাকান্ডকে শহিদী মৃত্যু হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দখলদার ইসরাইল বাহিনী গাজার রাফা শহরে ব্যাপক পরিসরে সামরিক অভিযান পরিচালনায় যে ঘোষনা দিয়েছিল ইসরাইলের ভূ-খন্ডে ইরানের হামলার পর রাফা শহরে সামরিক অভিযান হতে পিছিয়ে এসেছে দখলদার ইসরাইল।