দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইল ইরানে হামলা চালিয়ে বলে মার্কিন ও ইসরাইলি অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এবার ইরান যথার্থ জবাব দিয়ে বলেছে যে ইসরাইল ইরানে হামলার সক্ষমতা ও সামর্থ রাখে না এবং ইরান যে কোন ধরনের হামলা মোকাবিলায় তৎপর ও ক্ষমতা সুরক্ষিত রাখে। ইরান ইচ্ছা করলে মুহুর্তের মধ্যে ইসরাইলকে ধ্বংস স্তুপে পরিনত করতে পারে। গত শনিবার সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ও ইসরাইলের পত্র পত্রিকাগুলো হঠাৎ করেই প্রতিবেদন প্রকাশ করে যে ইসরাইল ইরানে হামলা পরিচালনা করেছে। এমন খবরে মুহুর্তের মধ্যে গোটা বিশ্বে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একই সাথে উত্তেজনার পারদ এমন পর্যায়ে পৌছায় যে ইসরাইলের সম্ভাব্য হামলাকে মোকাবিলা করতে ও নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখতে তেহরান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সহ অভ্যন্তরীন বিমান বন্দর গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। শুক্রবার দিনভর উত্তেজনা আর নাটকীয়তার মাঝে ইরান ঘোষনা করে যে দেশে কোন ধরনের বহিঃশক্তির আক্রমন ঘটেনি,নিজেদের আকাশ ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী ও সুরক্ষিত করার সময়ে একাধিক বিষ্ফরনের ঘটনা ঘটে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রাইসি বলেছে ইসরাইলকে কোন অবস্থাতেই আর বাড়াবাড়ি করতে দেওয়া হবে না। মধ্যপ্রাচ্যের অশান্তীর মুল কারন হিসেবে ইসরাইল অনেক আগেই তার নাম লিখিয়েছে বর্তমান সময়গুলোতে দখলদার আগ্রাসনবাদী ইসরাইল নিরীহ এবং নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে চলেছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা বলেছে ইরানে ইসরাইলি হামলা অত্যন্ত সীমিত আকারে ছিল এবং ইসরাইলের ছোড়া ড্রোন গুলো ইরানী কর্তৃপক্ষ মধ্য আকাশের তা ধ্বংস করে, আল জাজিরা আরও জানিয়েছে যে উক্ত হামলা বা হামলা নয় যাই ঘটুক না কেন তা ছিল কুটনৈতিক চ্যানেল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। শুক্রবার সকালে ইরান ও ইসরাইলের মাঝে কি ঘটেছিল তা আগামী দিনগুলোতে প্রকাশ হবে এমন বিষয়ের উপর ইঙ্গিত দিয়েছে আল জাজিরা। এদিকে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি বিষয়ে চলমান আলোচনা ভেঙ্গে গেছে অথবা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম ঘটেছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা জানিয়েছে দীর্ঘদিন যাবৎ হামাস নেতৃবৃন্দ কাতারে নিজস্ব কার্যালয় নিয়ে অবস্থান করে আসছিল এবং কাতারে বসে ফিলিস্তিনি হামাস যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রন সহ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল যে কারনে বারবার কাতার মাধ্যস্থতাকারী হিসেবে ইসরাইল ও হামাসের মাঝে অবস্থান গ্রহণ করে। এবারের যুদ্ধ বিরতির মধ্যস্থতাতেও কাতারের উপস্থিতি সক্রীয়। হামাসের প্রধানতম শর্ত ইসরাইলকে গাজা হতে তার সেনাদের প্রত্যাহার করতে হবে একই সাথে গাজা হতে বসত বাড়ী রেখে অন্যত্র আশ্রয় গ্রহণ করা ফিলিস্তিনিদেরকে নিজ বাসভবনে ফিরতে দিতে হবে, কিন্তু ইসরাইল হামাসের বক্তব্যের সাথে একমত নয়, তারা চাইছে সামরিক যুদ্ধ বিরতির মাধ্যমে তাদের বন্দী ইসরাইলিদের ফেরৎ পেতে। এমনই পরিস্থিতি, পরিবেশ ও বাস্তবতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাতারকে চাপ দিচ্ছে আর কাতার ও সেই চাপ দিচ্ছে হামাস নেতৃবৃন্দকে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে কাতারে এর চাপ সর্য্য করতে না পেরে অর্থাৎ মধ্যস্থতাকারী কাতারের ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করতে না পেরে হামাস নেতৃবৃন্দ কাতার ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে হয় কাতারের ইচ্ছানুযায়ী ইসরাইলের সাথে যুদ্ধ বিরতি ও বন্দী মুক্তিবিনিময় করতে হবে নতুবা কাতার হতে হামাস নেতৃবৃন্দকে তাদের কার্যালয় হতে ফিরে যেতে হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হামাস প্রধান সহ তাদের নেতৃবৃন্দ কাতার ত্যাগ করতে যাচ্ছে। আল জাজিরা আরও জানিয়েছে যে হামাসের পরবর্তি গন্তব্যস্থল হতে পারে ওমান। এদিকে গতকালও দখলদার ইসরাইলি বাহিনী মধ্যগাজা সহ গাজার কয়েকটি এলাকাতে ব্যাপক ভিত্তিক হত্যাকান্ড চালিয়েছে। স্থল অভিযান, হত্যার পাশাপাশি দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গণগ্রেফতার অভিযান ও পরিচালনা করেছে হামাস নিয়ন্ত্রীত গাজার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে গতকাল পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় চৌত্রিশ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। খান ইউনিসের সিফা ও রাফা শহরের আল নাসের হাসপাতাল কমপ্লেক্স এ গতকাল ও দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করেছে। গাজার অধিবাসিরা কেবলমাত্র খাদ্য অভাবে মৃত্যুবরণ করছে তা নয় বিনা চিকিৎসাতেও ফিলিস্তিনিরা মৃত্যু মুখে পতিত হচ্ছে। দখলদার বাহিনী গাজায় খাদ্য অনুপ্রবেশে বাঁধা দিচ্ছে। জাতিসংঘ বলেছে গাজার মানবিক বিপর্যয় রোধ না করা গেলে গাজা পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হবে।