দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ নারকেল আমাদের দেশের অতি পরিচিত এবং প্রয়োজনীয় ফল। ডাব ঔষধী ফল হিসেবে নিজের অবস্থান অনেক আগেই সুসংহত করেছে। দেশের উপকুলীয় এলাকাগুলো নারকেল চাষেরজন্য অতি পরিচিত। সাতক্ষীলা খুলনা বাগেরহাট এবং যশোরের কোন কোন এলাকা নারকেল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু সাম্প্রতিক বছর গুলোতে উপকুলীয় এলাকায় মারাত্মক ভাবে নারকেল উৎপাদনের ছন্দ পতন ঘটেছে। নারকেল চাষী, কৃষি বিভোগের সাথে সংশ্লিষ্ট সহ নারকেল ও ডাব ব্যবসায়ীদের ভাস্য মতে জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে উৎপাদনে ঢস নেমেছে। বারবার প্রকৃতির নিষ্ঠুর ছোবলে আবহাওয়ার স্বাভাবিকতা যেমন বিনষ্ট হয়েছে লবনাক্ততার সহনীয়তা উচ্চতায় পৌছেছে ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সংকুচিত হয়েছে দীর্ঘ দিনের জলবায়ূ যার প্রভাব পড়েছে নারকেল উৎপাদনে। একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক নারকেল গাছে অন্তত ছত্রিশটি পাতা থাকতে হয় কিন্তু সাতক্ষীরায় বিভিন্ন এলাকার নারকেল গাছ পর্যবেক্ষন দেখা গেছে পনের থেকে বিশটির বেশী পাতানেই। জলবায়ূ পরিবর্তনের কারন হেতু সাতক্ষীরায় নারকেল উৎপাদনে মারাত্মক ভাবে ছন্দ পতন ঘটেছে চাষীরা জানান বর্তমান সময় গুলোতে নারকেল গাছ গুলো হোয়াইট ফ্লাই, স্যুটি মোন্ড, ছত্রাক, শুতি মূল সহ নানান দরনের রোগের আক্রমনের শিকার, জানাগেছে ২০১৯ সালে বজগাম স্পাইবালিং হোয়অইটফ্লাই নামের একটি পোকা নারকেল গাছে আক্রমন শুরু করে যারপ্রভাব এখনও বিদ্যমান আর এর কারন ও জলবায়ূ পরিবর্তন। সাতক্ষীরা উপকুলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বুলবুল, সিডর, আইলা, ইয়াস, মোখার মত শক্তিশালী জ্বলোচ্ছাস ও ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব নারকের চাষে ব্যাপক ভাবে পড়ে। যে কারনে সাতক্ষীরার নারকেল গাছ গুলো নারকেল শুন্য। বানিজ্যিক ভাবে সৃষ্টনারকেল বাগান গুলোর অবস্থাও ভাল নয়। চাষী বাগানে ব্যাপক ভত্তিক পরিচর্যার আতওয়া থাকলেও বাস্তবতা হলো জলবায়ূর পরিবর্তন এর নিরুপ প্রভাব বাগানগুলোকে অপেক্ষাকৃত কম উৎপাদনে নিয়েছে। জলবায়ূর প্রভাব এতটুকু প্রকট ও প্রবল ভাবে দৃশ্যমান যে নারকেলের গুটি পড়ে যাওয়া, গুটি পচে যাওয়া, কুড়ি পাঁচা, ফল পচা , গুটি ঝরে পড়া, শিখড় পচে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। চাষীরা জানান সাতক্ষীরার নারকেল উৎপাদনে কমতে থাকে ২০০৭ সালের সিডর ও ২০০৯ সালে আইলার পর থেকে। নারতেল দৃশ্যতঃ অর্থকরি ফসল হিসেবে নিজের অবস্থান সুসংহত করলেও বর্তমান সময়ে নারকেল উৎপাদনের সোনালী অতীতই যেন তার গ্রহন যোগ্যতা জানা দিচ্ছে। নারকেল উৎপাদন আশাঙ্কাজনক ভাবে হ্রাস পাওয়ায় ইতিমধ্যে বাজার ব্যবস্থায় তার প্রভাব পড়ছে। এক ভচর পূর্বেও একটি ডাব ছিল বিশ পচিশটাকা কিন্তু বর্তমান সময় গুলোতে নারকেল উৎপাদনের জেলা সাতক্ষীরাতেও প্রতিটি ডাব বিক্রি হচ্ছে আশি,নব্বুই,একশত টাকায়। ঝুনি নারকেল প্রতিটি একশত বিশ থেকে পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাতক্ষীরার বানিজ্যিক ভিত্তিতে নারকেল গাছ আছে কিন্তু পরিবারেরনুন্যতম প্রয়োজনও মিটছে না কারন ফলন নেই। নারকেলের ওডাবের অর্থনৈতিক বানিজ্যিক মূল্যের কারনে এই ব্যবসার সাথে সাতক্ষীরার বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়িত কিন্তু উৎপাদন, উপস্থিতি এ যোগান আর চাহিদার ভারসাম্য না থাকায় ব্যবসাতেও মন্দা ভাব বিরাজ করছে। নারকেলের মেরব্বা, শিরনি,ফিরনি, ক্ষির,হালুয়াযেমন রসনা তৃপ্ত করে অনুরুপ ভাবে নারকেলের তেল, খইল, নসারকের পাতার কাঠি,পাতা,গুড়ি সবইনিত্য প্রয়োজনীয়। সাতক্ষীরা নুন্যতম অর্থকরি ফসল নারকেলের উৎপাদন পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কৃষিদপ্তরকে এগিয়ে আসতে হবে এবং জলবায়ূ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনাকে সামনে আনায়ন করতে হবে।