দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্য গাজার বিস্তীর্ণ ভূমিতে প্রতিমুহুর্তে বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের মাধ্যমে নিরীহ ফিলিস্তিনিদেরকে হত্যা ও আহত করলেও বারবার যুদ্ধবিরতির আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ পনের দিন পূর্বে ও দখলদার ইসরাইল কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতির আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত পৌছালেও দখলদার ইসরাইল তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে যুদ্ধ বিরতির যে ক্ষেত্র উদ্ভব ঘটে তা ও ফেসতে যায়। আবারও ইসরাইল যুদ্ধ বিরতির আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে হামাসের পক্ষ হতে তা প্রত্যাখান করা হয়েছে। কাতার ভিত্তিক আল জাজির টেলিভিশন হামাস প্রধান ও তার যোদ্ধাদের মতামতের ভিত্তিতে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, ইসরাইলের সাথে আর কোন আলোচনা হবে না। হামাসের পক্ষ হতে বলা হয়েছে ইসরাইলকে প্রথমত গাজায় হামলা বন্ধ করতে হবে। হামলা ও হত্যা বন্ধ করলেই কেবল যুদ্ধবিরতি আলোচনা সম্ভব। একদিকে যুদ্ধ বিরতি হামলা অন্যদিকে আলোচনা এটাকে কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া হবে না। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা বলেছে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া ভিডিও বার্তায় বিষয়টি জানান। হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া আরও বলেন, তারা পূর্বেকার আলোচনায় সময় গুলোতে যথেষ্ট নমনীয়তা প্রদর্শন করেছিল কিন্তু দখলদার ইসরাইলিল আগ্রাসন নীতির কারনে আলোচনার ফলাফল শুন্য থেকে যায়। হামাস প্রধান আবারও বলেন, হামাস ও ফিলিস্তিনিদের উপর নির্বিচারে হত্যা, অবরোধ, আগ্রাসন এবং দুর্ভিক্ষ অব্যাহত থাকা অবস্থায় হামাস আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার নীতি গ্রহন করতে পারে না। আমরা তাই আলোচকদের কে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছি ইসরাইল গাজায় হামলা ও হত্যাবন্ধ না করলে কোন ভাবেই হামাস আলোচনায় বসতে পারে না। হামাসের এই ঘোষনার মধ্য দিয়ে গাজা পরিস্থিতি তথা যুদ্ধ পরিস্থিতি নতুন ভাবে বিস্তৃত হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এদিকে গতকালও দখলদার ইসরাইল বাহিনীর সদস্যরা গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকাতে বিমান হামলা পরিচালনা করেছে। গত চব্বিশ ঘন্টায় দখলদার বাহিনীর হামলায় ৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা সর্বাধিক। দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা গাজা উপত্যকার সর্বত্র হামাস যোদ্ধাদের দ্বারা প্রতিরোধ হামলার সম্মুখিন হচ্ছে। হামাস যোদ্ধারা পরিপূর্ণ শক্তি আর সক্ষমতা নিয়ে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সাথে প্রতিরোধ হামলায় যুদ্ধ করে চলেছে। এদিকে হামাস যোদ্ধাদের হামলায় গতকালও দুই দখলদার ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে। পশ্চিম গাজায় যুদ্ধরত দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যদের উপর হামাস যোদ্ধারা হামলা পরিচালনা করলে ঘটনাস্থলে দুই দখলদার সেনার নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় উক্ত হামলায় আর ও পাঁচ ইসরাইলি সেনা মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছে। মিশর ইসরাইল উত্তেজনা ক্রমস বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন কোন সময় নেই যে সময়ে মিশর ও ইসরাইলি সীমান্তে স্ব স্ব দেশের সেনাদের উপস্থিতি থাকছে না। দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা রাফা ক্রসিং বন্ধ করে দিয়ে দৃশ্যতঃ ঐতিহাসিক রাফা শহরকে অবরুদ্ধ করতে রাফা ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। মার্কিন যুক্তারাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কারনে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা রাফা ক্রসিং খুলে দিয়েছে যে কারনে মিশর হতে রাফার ত্রান সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাফা শহরের গতকালও দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা বিমান হামলা পরিচালনা করেছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়া রয়টার্স ও এ এফপির খবরে বলা হয়েছে রাফায় প্রকৃত পক্ষে চলছে নিষ্ঠুরতা। গতকালও রাফায় ব্যাপক ভিত্তিক হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা তবে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরাও ব্যাপক ভাবে হামাস যোদ্ধাদের দ্বারা প্রতিরোধ হামলার সম্মুখিন হয়েছে। গাজা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ এবার বিষ্ফরনমূলক মন্তব্য করলো সংস্থাটির মানবাধিকার কমিশন বলেছে গাজায় যে ভাবে হত্যাকান্ড চলছে এবং অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছ তাতে একথা বলা যায় যে গাজা বর্তমান সময়ে বিশ্বের দোজখ। পরিস্থিতি কতটুকু বিপদ জনক ও বয়াবহ হলে গাজাকে পৃথিবীর দোজখ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়। স্পেন নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ডের পর এ বার ইউরোপের অপর দেশ স্লোভেনিয়া ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এদিকে হুতি যোদ্ধারা গতকাল লোহিত সাগর ও ভারত মহাসগরে ইসরাইল সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা চালিয়েছে। গাজার কোনকোন এলাকায় ত্রান বিতরনকরা হলেও অধিকাংশ এলাকায় ত্রান যাচ্ছে না বিধায় ফিলিস্তিনিরা ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি অবস্থান করছে।