এফএনএস : দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে একযোগে ১৯টি কেন্দ্রের মোট ৫৭টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রগুলো মধ্যে ১৮টি মেডিক্যাল কলেজ ও ১টি ছিল ডেন্টাল কলেজ। দেশব্যাপী মোট ৪ হাজার ৩৫০টি আসনের বিপরীতে এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মোট ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯১৫ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় অংশ নিয়েছে ৬১,৬৭৮ জন প্রার্থী। সরকারী মেডিক্যাল কলেজের একটি আসনের বিপরীতে ৩৩.০৮ জন করে প্রার্থী অংশ নিয়েছে যা বিগত যেকোন বছরের তুলনায় বেশি। আর এই পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি। যার ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন সুযোগ নেই। পরীক্ষা কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শনের লক্ষ্যে সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেন্দ্রে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো। প্রশ্নপত্র মানসম্পন্ন হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস নিয়েও নানা মহল গুজব ছড়াতে চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট সচেতন রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র শুরু থেকে কেন্দ্রে পরীক্ষা শেষ হওয়া ও রেজাল্ট দেয়া পর্যন্ত সব ধরনের সতর্কতা আমরা নিয়েছি। প্রশ্নপত্র বহনকারী গাড়িটিও আমরা ডিজিটাল মনিটরিং এর আওতায় রেখেছি। সামাজিক মাধ্যমে কিছু লোক ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছিল। তার আগেই আমরা সে রকম দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে তারা এখন রয়েছে। অভিভাবকদের শুধু এটুকু বলতে চাই, তারা যেন বাইরের কোন উস্কানিতে কান না দেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক ও কঠোরতার মাধ্যমে এই পরীক্ষায় শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে ফলাফল প্রকাশ করবে। প্রযুক্তির ব্যবহারের উদাহরণ টেনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যেই গাড়িতে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়, সে গাড়িগুলোকে আমরা ডিজিটালি ট্র্যাক করেছি। ডিজি (স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিরেক্টর জেনারেল) অফিসে বসে আমরা দেখতে পারি কোথায় গাড়ি যাচ্ছে, থামছে কিংবা রওনা দিচ্ছে। যে বাক্সে করে প্রশ্ন নেয়া হয়, সেগুলো খুললেও বোঝা যায় যে, এই বাক্সগুলো এখন খোলা বা বন্ধ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে এখন ৭২টি বেসরকারী এবং ৩৭টি সরকারী মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। যেগুলোতে মোট আসন রয়েছে ১০ হাজার ৮৩৯টি। এতে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯১৫ জন শিক্ষার্থী। যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বছর সারাদেশের মোট ৫৭টি ভেন্যুর ১ হাজার ৭৯২টি কেন্দ্রে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি দু-একটা হলে গিয়েছি, পরীক্ষা সুন্দরভাবে শুরু হয়েছে। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ এবিএম খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মেডিক্যাল শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ এ কে এম আহসান হাবীব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ সামাদ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের সাবেক সচিব মোঃ আলী নূর, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ টিটু মিয়া, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।