এফএনএস: ব্যাপক ‘সংস্কারের’ মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ যাত্রায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পূর্ণ সমর্থনে চেয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার ঢাকায় বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার মিশন প্রধানদের নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “আমি এমন এক সময়ে একটা দেশের দায়িত্ব নিয়েছি, যা অনেক দিক থেকে পুরোপুরি বিশৃঙ্খল। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্র দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। “বিচার বিভাগ ধসে গেছে। দেড় দশক ধরে ভয়াবহ দমন-পীড়নের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার দমন করা হয়েছে।নির্লজ্জভাবে নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম ভোটাধিকার প্রয়োগ ছাড়াই বেড়ে উঠেছে। রাজনৈতিক মদদে বাংকগুলো ডাকাতি করা হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে লুট করা হয়েছে।” ইউনূস বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী ও গণমাধ্যমে মৌলিক সংস্কার এনে আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করব। জাতীয় পুন-একত্রিকরণের ক্ষেত্রে আন্তরিক প্রচেষ্টা আমরা চালাব।” সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও টেকসই প্রবৃদ্ধির ধারা ফেরাতে জোরালো ও সুদূরপ্রসারী সংস্কার করার ওপর জোর দেন ইউনূস। তিনি বলেন, তার সরকার দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা রোধ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অগ্রাধিকার দেবে। আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আওতায় সব ধরনের বাধ্যবাধকতা বাংলাদেশ মেনে চলবে বলেও কূটনীতিকদের সামনে অঙ্গীকার করেন প্রধান উপদেষ্টা। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন ও রাশিয়াসহ ৫০ জনের বেশি কূটনীতিত এই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আর এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদে ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের দায়িত্ব নেয়। নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ ঘোষণা না করে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কারেই জোর দিচ্ছ এ সরকার।