দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য কারোর সাথে শত্রুতা নয়, সকলের সাথে বন্ধুত্ব। ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহনীয় এই বৈদেশিক নীতির কল্যাণে লাল সবুজের দেশটি বিশ্ব সভ্যতায় উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ কেবল সকলের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তা নয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সাথে সুসম্পর্ক এবং বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী দেশের মন্তব্য, বক্তব্য, অবস্থান এদেশের বৈদেশিক নীতির সাথে যেমন সাংঘর্ষিক অনুরূপভাবে প্রতিবেশীসুলভ আচরণের বিপরীত। পরিস্থিতি কতটুকু হিংসাত্মক এবং অবমাননাকর যে ত্রিপুরায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের জাতীয় পাতাকাকে পুড়িয়ে অসম্মান করা হয়েছে বাংলাদেশকে। বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব, নোবেল বিজয়ী দেশকে গণতন্ত্রের পথে আমার সাহসী সন্তান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের কুশপুত্তিলিকা দাহ করা হয়েছে। সীমান্তের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে উগ্রপন্থীরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের হীন প্রচেষ্টা চালিয়েছে। কোথাও কোথাও আমদানী রপ্তানীতে বাঁধাসৃষ্টি করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা করার চরম দৃষ্টতা দেখিয়েছে। প্রতিবেশী দেশের অন্তত ৪৯টি মিডিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে এদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে এমন মিথ্যা, ভিত্তিহীন খবর প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু কেন? প্রতিবেশী দেশের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের কোন ঘাটতি তো ছিল না। কেবলমাত্র সরকার পরিবর্তন হয়েছে তাও ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। একটি দেশের সরকারের সম্পর্ক থাকা উচিৎ দেশবাসির সাথে। কোন ব্যক্তিকেন্দ্রীক নয়। ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। সে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বের শতশত কোটি মানুষের শ্রদ্ধার কেন্দ্রবিন্দু দেশটির গণতন্ত্র। বিধায় গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের ধারক দেশটির সমার্থন থাকা জরুরী প্রতিবেশী দেশের জনমতের উপর। বাংলাদেশীদের ভিসা প্রদান সংকুচিত করা হয়েছে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ড. মুহম্মদ ইউনুসের সরকার ভারতীয়দের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের ভিসা প্রাপ্তি সীমিত করেছে। অপরাধী অপরাধীই। অন্যায়কারীর পরিচয় অন্যায়কারী হিসেবে, আইন অমান্যকারীকে আইন বিরোধ হিসেবেই দেখা হয়। এক্ষেত্রে তার ধর্ম, বংশ বা গোত্র পরিচয় অনুপস্থিত। দেশের প্রচলিত আইনে গ্রেফতার ঘটনা ধর্মীয় উন্মাদনাকে উসকে দেওয়ার অর্থ সম্প্রীতির বাংলাদেশের শরীরে কালিমা লেপন করা। অন্তবর্তীকালীন সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সম্প্রীতির বাংলাদেশকে সবধরনের হানাহানি বা বিশৃঙ্খলা হতে দুরে রেখেছে। দেশবাসী সম্প্রীতির গুণে গুণান্বীত, সম্প্রীতিকে সম্মান করে। এ দেশ সব ধর্মের মানুষের। সকলেই দেশবাসি। বড় ধর্ম মানবতা। আর তাই দেশবাসি কোন চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেইনি। সরকার পরিস্থিতিকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করেছে। দেশবাসি প্রত্যক্ষ করেছে অন্তবর্তী সরকার জাতীয় স্বার্থে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে অবিচল। দিয়েছেন ঐক্যের ডাক।