এফএনএস বিদেশ : রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ। গতকাল শুক্রবার সকালের ব্যস্ত সময়ে এই হামলা চালানো হয়। একই সময়ে কৃষ্ণসাগরের বন্দর শহর ওডেসা এবং পশ্চিম ইউক্রেনের আরও কয়েকটি শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। এ বছরের বেশিরভাগ সময় জুড়েই রুশ বাহিনী ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করে আসছে। গত মাসে এই হামলার নতুন ধারা শুরু হয়, যা লাখো সাধারণ মানুষের জন্য দীর্ঘ সময়ের বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতার কারণ হয়েছে। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ ইতোমধ্যে ৩৪ মাসে গড়িয়েছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, রাশিয়ার লক্ষ্য আমাদের বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা। তবে আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত রাশিয়াকে সন্ত্রাসের উপায় থেকে বঞ্চিত করা। বিদ্যুৎখাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবারের হামলায় ইউক্রেনের বিদ্যুৎ সাবস্টেশনগুলোকে প্রধান লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তবে এবার গ্যাস অবকাঠামোতেও অতীতের তুলনায় বেশি হামলা হয়েছে। হামলার সময় ইউক্রেনের জ্বালানি কর্মকর্তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য জরুরি বিদ্যুৎ বন্ধের ঘোষণা দেন। তবে এটি নতুন কোনও ক্ষয়ক্ষতির কারণে, না কি পূর্বসতর্কতা হিসেবে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিদ্যুৎ কোম্পানি ইয়াসনোর প্রধান নির্বাহী জানিয়েছেন, তাদের প্রায় ৩৫ লাখ গ্রাহকের অর্ধেকই গতকাল শুক্রবার সকালে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলার ফলে পাওয়ার গ্রিডের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খুব কম তথ্য প্রকাশ করেন। ফলে নতুন কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা নেটওয়ার্কের অবস্থা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। পশ্চিমাঞ্চলের লভিভ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ওপর হামলা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা। রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে, তারা বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করে না। তবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে তারা সামরিক লক্ষ্যবস্তু হিসেবে দেখে। চলতি বছরে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো ইতোমধ্যে ১১ দফা হামলার শিকার হয়েছে, যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং দীর্ঘ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার কারণ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আগে রাতভর ডজনখানেক ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালায় রাশিয়া।