শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৬ অপরাহ্ন

মোংলা বন্দরের জন্য নতুন আইন পাস

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২

এফএনএস: জাতীয় সংসদে মোংলা বন্দরের স্থাপনা ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়ার বিধান রেখে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল-২০২১ পাস হয়েছে। বিলে সরল বিশ্বাসের কর্মকান্ডে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিলে ‘সরল বিশ্বাস’ এর সজ্ঞা দেওয়া হয়নি। এর ফলে দুর্নীতি আরও বাড়বে বলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। গতকাল সোমবার নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিলটি সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়। গত বছরের ৩ এপ্রিল বিলটি সংসদে ওঠানোর পর দুই মাসের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ওই বছরের জুন মাসে কমিটি বিলের প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করে। পরে সেপ্টেম্বর মাসে বিলটি আবারও সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৮ সালে প্রণীত আইনগুলো বাতিল করা হচ্ছে। এজন্য মোংলা পোর্ট অথরিটি অর্ডিন্যান্স- ১৯৭৬ এর পরিবর্তে নতুন এ আইন করা হচ্ছে। বিলে বলা হয়, বন্দরের কোনো স্থাপনা নির্মাণ, ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সরকারি বিধি অনুসারে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ করা যাবে। আগের আইনে এটা ছিল না। বিলে আরও বলা হয়, কোনো ব্যক্তি বা জাহাজবন্দর সীমানা দূষিত করলে, প্রথম অপরাধের ক্ষেত্রে অনূন্য এক বছর, অনধিক দুই বছর কারাদন্ড বা অনূন্য ৫০ হাজার টাকা, অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড রাখা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রতিটি অপরাধের ক্ষেত্রে অনূন্য দুই বছর, অনধিক ১০ বছরের কারাদন্ড বা অনূন্য দুই লাখ টাকা, অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। প্রয়োজনে দেশের যে কোনো স্থানে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কার্যালয় স্থাপন করা যাবে। বিলে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। বন্দরের বিভিন্ন এলাকা ও স্থানকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা যাবে। বন্দরে পণ্যবোঝাই, সংরক্ষণ, খালাস ও সরবরাহের জন্য প্রয়োজনে প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে অপারেটর নিয়োগের বিধান সংযোজন করা হয়েছে। বিলে বলা হয়, টোল, রেট, মাশুল ইত্যাদি ফাঁকি দিলে ছয় মাসের জেল অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনের অধীন যে অপরাধ হবে সেগুলো ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিচার হবে, ভ্রাম্যমাণ আদালতেরও বিধান রাখা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ এক লাখ টাকা পর্যন্ত আদায়যোগ্য টোল, রেট, ফি ও মাশুল সরকারের পূর্বানুমোদন ছাড়া সম্পূর্ণ বা আংশিক মওকুফ করতে পারবে। বিলে সরল বিশ্বাসে করা কাজ রক্ষণ করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়Ñ এ আইনের অধীনে সরল বিশ্বাসে করা কোনো কাজের ফলে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তারজন্য কর্তৃপক্ষ বা এর চেয়ারম্যান, কোনো সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা রুজু করা যাবে না বা অন্য কোনো আইনগত কার্যধারাও নেওয়া যাবে না। এর ব্যাখ্যায় বলা হয়- এ ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ‘সরল বিশ্বাস’ বলতে অবহেলার সঙ্গে করা হোক বা না হোক প্রকৃতপক্ষে সততার সঙ্গে করা হলে কোনো কিছু ‘সরল বিশ্বাস’ এ করা হয়েছে বলে গণ্য হবে। বিলে সরল বিশ্বাস শব্দটি রাখায় বিএনপির রুমিন ফারহানা, জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুসহ অনেকেই সমালোচনা করেন। তারা বলেন, এতে করে দুর্নীতি আরো বাড়বে। এ ছাড়া সরল বিশ্বাস বলতে কি বোঝানো হয়েছে তার সজ্ঞা বিলে নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com