এফএনএস বিদেশ : দিল্লির বায়ু দূষণ আবারও বিপজ্জনক মাত্রায় পেঁৗছেছে। গতকাল বুধবার বায়ুর মান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত নিরাপদ সীমার চেয়ে ৩৫ গুণ বেশি ছিল। এর ফলে শহরের বাসিন্দারা শ্বাসকষ্ট, চোখ ও গলার চুলকানি নিয়ে অভিযোগ করেছেন। শীর্ষ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, ভারতের এই বিষাক্ত বাতাস কোভিড—১৯ মহামারির চেয়েও বড় প্রভাব ফেলবে জনস্বাস্থ্যে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান সূচক আইকিউএয়ার অনুসারে, গতকাল বুধবার সকালে দিল্লির কিছু অংশে দূষণের মাত্রা ৫৫০ ছাড়িয়ে গেছে, যা ‘বিপজ্জনক’ মাত্রা ৩০০—এর চেয়েও অনেক বেশি। বায়ু মান সূচক (একিউআই) বাতাসে থাকা সূক্ষ্ম কণার মাত্রা পরিমাপ করে, যেগুলোকে পিএম ২.৫ বলা হয়। এটি ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক দূষক’ এবং দূষণের মাত্রা নির্ধারণের জন্য ‘একমাত্র নির্ধারক’। দিল্লির বায়ু দূষণের প্রভাব কমাতে কর্তৃপক্ষ মানুষকে বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের যতটা সম্ভব ঘরের ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। চিকিৎসকরা মাস্ক পরার সুপারিশ করেছেন কিন্তু আইকিউএয়ারের গ্লোবাল সিইও ফ্রাঙ্ক হ্যামস সতর্ক করেছেন যে এটি শুধু একটি স্বল্পমেয়াদি সমাধান। আরও অনেক কিছু করা প্রয়োজন। তিনি বিবিসিকে বলেন, উদ্বেগজনক বায়ু দূষণের মাত্রা একটি জনস্বাস্থ্য মহামারি। বিষাক্ত বাতাস মৃত্যুহার থেকে শুরু করে আইকিউ স্তর পর্যন্ত সবকিছুর ওপর প্রভাব ফেলে। তিনি আরও বলেন, ‘এটি জনস্বাস্থ্যের ওপর কোভিড—১৯—এর চেয়েও বড় প্রভাব ফেলবে।’ শীতকালে দিল্লি এবং আশেপাশের রাজ্যগুলোতে নিম্ন বায়ু প্রবাহ, যানবাহনের ধেঁায়া এবং ফসলের অবশিষ্টাংশ ও কাঠ পোড়ানোর কারণে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানির সমস্যা, হৃদযন্ত্র এবং ফুসফুসের সমস্যা বেড়ে যায়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার অনুমতি দেওয়ার দুই সপ্তাহেরও কম সময় পরে, দিল্লি সরকার মঙ্গলবার আবারও কঠোর দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করেছে নিষেধাজ্ঞার অধীনে সব ধরনের নির্মাণ এবং ভাঙার কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পণ্যবাহী লরি এবং ভারী যানবাহন ছাড়া অন্য সব যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। ‘বায়ু দূষণ এখন দিল্লির জন্য একটি অসুস্থ রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে’, বলে হতাশা প্রকাশ করছেন শহরের বাসিন্দারা।