বিশেষ প্রতিনিধি \ খান বাহাদুর আহছানউল্লা (র.) ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা মনিষী। একবিংশ শতাব্দির মোজাদ্দেদ। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এঁর বহুমুখি প্রতিভা ছিল, সুবিস্তৃত ছিল তাঁর কর্মপ্রয়াস। তিনি ১৮৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। সে সময় বাংলাদেশে মাত্র দুজন মুসলমান এই ডিগ্রী লাভ করেন। আহছানউল্লা (র.) ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। তিনি শিক্ষক থেকে শিক্ষা বিভাগের সর্ব উচ্চ পদে তার কর্ম জীবন শেষ করেন। তার কর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মুসলমানদের জন্য ফুলার হোস্টেল নির্মাণ, সারা দেশে ৩শ’র বেশি স্কুল মাদ্রাসা নির্মাণে মুখ্য ভুমিকা পালন। তিনি তার কর্মজীবন শেষ করে ফিরে আসে তার পুণ্যভুমি নলতায়। তিনি দিনে তার কাজ করতেন আর রাতে চলে যেতেন গহিন বনে একা একা আল্লাহর ধ্যানে নিজেকে বিলিন করতে। খাঁন বাহাদুর আহছানউলা (র.) জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানব সেবায় কাজ করে গেছেন। তিনি বেঁচে থাকাকালীন নিজের জায়গা জমি বিক্রি করে দিয়ে মানবকল্যাণে অনেক উন্নয়ন করে গেছেন। তিনি আধুনিক শিক্ষার রূপকার ছিলেন। তিনি ‘স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবা’ উদ্দেশ্য নিয়ে মিশন তৈরি করে ছিলেন। সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ২৮ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১০ টায় নলতা পাক রওজা শরীফ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত পীর—এ কামেল বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মোজাদ্দেদ, অবিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা সংস্কারক, প্রখ্যত সাহিত্যিক, সমাজ সেবক, আত্মাধিক সাধক, সমাজ সংস্কারক, জ্ঞান তাপস, মুসলিম রেনেঁসার অগ্রদুত, মুক্তবুদ্ধি ও অসা¤প্রদায়িক চিন্তা—চেতনার অধিকারী, মনোচিকিৎসক, ঐতিহাসিক, দার্শনিক সুলতানুল আউলিয়া কুতুবুল আকতাব গওছে জামান আরেফ বিল্লাহ হজরত শাহ্ ছুফী আলহাজ্জ খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রঃ) এঁর ১৫১ তম জন্মবার্ষিকীর সেমিনারে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন। নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সহ সভাপতি ডা. আফতাবুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বর্তমান শিক্ষা সংস্কারে হযরত খান বাহাদুর আহছানুল্লা (র.) এর শিক্ষা চিন্তা ও কর্মের প্রয়োগিক বাস্তবতা’ বিষয়ক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. একরাম হোসেন । অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. কাজী আলী আজম। খানবাহাদুর আহছানউল্লা ইনস্টিটিউট এর পরিচালক মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান, খান বাহাদুর আহছানউল্লা ইনস্টিটিউট মহাপরিচালক এএফএম এনামুল হক, কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক গাজী আজিজুর রহমান। অনুষ্ঠান শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন নলতা শরীফ জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করেন হাফেজ জোবায়ের হোসেন। গজল পরিবেশন করেন মোঃ ফিরোজ আলম। দোয়া পরিচালনা করেন নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশন ও বিভিন্ন শাখা মিশনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, ব্যবসায়ীবৃন্দসহ সাংবাদিক ও বিভিন্ন গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।