এফএনএস এক্সক্লুসিভ: সব ক্ষেত্রেই কমবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিবি) আকার। বর্তমানে এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়নে তেমন গতি নেই। পাশাপাশি বিদেশি সহায়তার প্রবাহও বেশ নাজুক। এমন অবস্থায় এডিপিতে বিদেশি সহায়তা বাবদ বরাদ্দ থেকে প্রায় ২৫ শতাংশ কাটছাঁট করা হচ্ছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রায় এক লাখ কোটি টাকা এডিপিতে বিদেশি সহায়তা বাবদ বরাদ্দ ধরা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর চাহিদা এবং বাস্তবায়ন বিবেচনায় তা ২৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ৭৫ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দেশের চলমান এডিপির আকার ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্থানীয় বা নিজস্ব উৎস থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়। প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ওই টাকা পাওয়ার কথা। বাকি অর্থ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলো নিজেদের প্রকল্পে যে অর্থায়ন করছে, সেখান থেকে জোগান দেয়া হবে। কিন্তু এখন সব ক্ষেত্রেই এডিপির আকার কমানো হচ্ছে। ফলে এডিপির মোট আকার আড়াই লাখ কোটি টাকার নিচে নেমে আসবে। এ বিষয়ে চলতি জানুয়ারি মাসেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সূত্র জানায়, এডিপি বিদেশি সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলো নিয়ে কাটছাঁট করা গত নভেম্বর মাসেই শুরু হয়। ওই মাসের প্রথম সপ্তাহে ইআরডি ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব ও প্রধানদের কাছে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠায়। তাতে বলা হয়, প্রশাসনিক অনুমোদন ব্যতীত কোনো নতুন প্রকল্পে বরাদ্দের প্রস্তাব করা যাবে না। কোনো প্রকল্পের মেয়াদ বা খরচ বৃদ্ধির প্রয়োজন হলে সরকারি আদেশের কপি পাঠাতে হবে। তারপর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন নেয়া প্রকল্পের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক দফায় বৈঠক করে ইআরডি কর্মকর্তারা। পরবর্তী সময়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা কমানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যদিও ওসব বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ৯১ হাজার কোটি টাকা দেয়ার চাহিদা ছিল। তাছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের প্রতি মাসেই যত বিদেশি সহায়তা এসেছে, এর চেয়ে বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে। বর্তমান এডিপিতে সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩৫২টি প্রকল্প আছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে অপ্রয়োজনীয় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেয়া প্রকল্প বাদ বা বরাদ্দ কমানোর উদ্যোগ নেয়। তবে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের ওপরই কাটছাঁট বেশি হচ্ছে। সংশোধিত এডিপিতে বাদ যেতে পারে একশ’র মতো প্রকল্প। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই-নভেম্বরে এডিপির মাত্র ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। বাস্তবায়ন হারের পাশাপাশি টাকার অঙ্কেও এই সময়ে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম অর্থ খরচ হয়েছে।