বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:১২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দেবহাটায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করলেন মুহাদ্দিস রবিউল বাসার শ্যামনগরে বিএনপি’র দু—গ্রুপের সংঘর্ষ,রণ ক্ষেএ, ১৪৪ ধারা জারী, ভাংচুর,সদস্য সচিব অবাঞ্চিত ঘোষনা,সেনা পুলিশ উপস্থিতি রংপুর বিভাগে আবারও শৈত্যপ্রবাহ, বেড়েছে শীতজনিত রোগ জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস আলম রপ্তানি পণ্যে হিসেবে নতুন মাত্রা যোগ করেছে কৃষিপণ্য খুলনা সদর থানার ওসির অপসারণ দাবি বিএনপির হাসিনার আমলে লুট হয় ১৭ বিলিয়ন ডলার ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতিকে ড. ইউনূস অপরাধের দায় স্বীকার না করে আ. লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না: প্রেস সচিব মহার্ঘ ভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ব্রিটেনের কাছে ঔপনিবেশিক ভারতের পাওনা ৫২ ট্রিলিয়ন পাউন্ড: অক্সফাম

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস বিদেশ : ঔপনিবেশিক শাসনের সময় অখণ্ড ভারতের কাছ থেকে ৫২ ট্রিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ ব্রিটেন লুট করেছে বলে অক্সফামের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো একটি আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ঔপনিবেশিক ইতিহাসের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে। ওক্সফামের প্রতিবেদনে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি ক্ষতিপূরণ প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঔপনিবেশিক শাসন ও দাসত্বের ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দিতে প্রতি বছর কমপক্ষে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে, ধনী ব্যক্তি ও বৃহৎ কর্পোরেশনগুলোর ওপর কর বৃদ্ধি করে এই অর্থ সংগ্রহ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে, ঔপনিবেশিক ইতিহাসের ফলে তৈরি বৈষম্য দূর করতে বিশ্বের অর্থনৈতিক কাঠামো পুনর্গঠন প্রয়োজন। প্রতিবেদনে উল্লেখিত ৫২ ট্রিলিয়ন পাউন্ডের পরিসংখ্যান ভারতীয় অর্থনীতিবিদ উৎসা পটনায়েক এবং প্রভাত পটনায়েকের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে দাবি করা হয়েছে। ২০১৮ সালে তারা দাবি করেছিলেন, ব্রিটেন ১৭৬৫ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে ভারতের কাছ থেকে প্রায় ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ লুট করেছে। অক্সফাম এই গবেষণার হালনাগাদ সংস্করণ হিসেবে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে নতুন পরিমাণ ৬৪.৮২ ট্রিলিয়ন ডলার বলে দাবি করা হয়েছে। অক্সফামের মুখপাত্র বলেছেন, ঔপনিবেশিক ইতিহাসের প্রভাব বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বৈষম্যের মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি, যা দূর না করলে সমতা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভবিষ্যতের জন্য একটি আরও ন্যায়সংগত বিশ্ব গড়ার দিকে নির্দেশিত। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ভারতবর্ষ থেকে ব্রিটেনে নেওয়া কোহিনুর হীরা ভারতে ফেরানোর দাবি জোরেশোরে উঠেছে। তবে শুধু ভারতবর্ষ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লুট করা সম্পদ ফের দেওয়ারও দাবি উঠছে। ষোড়শ থেকে বিংশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত বিশ্বের বড় অংশজুড়ে বিস্তৃত ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। আর এই বিশাল উপনিবেশের মানুষদের কাছ থেকে অসংখ্য মূল্যবান সম্পদ লুটের অভিযোগ উঠেছে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে। ব্রিটিশ জাদুঘরে থাকা ৮০ লাখের বেশি নিদর্শনের মধ্যে পাচার করা সামগ্রীর সংখ্যাই বেশি বলেও দাবি রয়েছে। অন্তত ৯টি প্রখ্যাত ও অমূল্য সাংস্কৃতিক নিদর্শন উপনিবেশ থেকে চুরির অভিযোগ রয়েছে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে। অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজের একাধিক শিক্ষাবিদ এই প্রতিবেদনের পদ্ধতিগত বিশ্লেষণকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছেন। অক্সফোর্ডের সেন্ট পিটার্স কলেজের অধ্যাপক লরেন্স গোল্ডম্যান বলেছেন, বিশ্বকে খাদ্য সরবরাহের জন্য প্রতিষ্ঠিত সংস্থার নিজের নাম ব্যবহার করে ইতিহাসকে বিকৃত করা অত্যন্ত দুঃখজনক। অক্সফাম তথ্যের নির্ভুলতার ওপর জনসাধারণের বিশ্বাসের ওপর নির্ভরশীল। এমন মিথ্যা ইতিহাস প্রচার তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা গেছে, ভারতকে ফরাসি সাম্রাজ্যের অংশ হওয়া থেকে রক্ষা করা, জার সাম্রাজ্যের দখল এড়ানো এবং জাপানি আক্রমণ ঠেকানোর জন্য ব্রিটেনের অবদানকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কিন্তু ইতিহাসকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার এই ধরনের চেষ্টা একেবারেই অর্থহীন। ক্যামব্রিজের সেন্ট জনস কলেজের অধ্যাপক রবার্ট টুমস দাবি করেন, ৫২ ট্রিলিয়ন পাউন্ড ঋণের এই হিসাব সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ ধরনের অমূলক অভিযোগ অক্সফামের পুরো প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com