ডুমুরিয়া প্রতিনিধি \ মারামারি ও গোলাগুলির মামলায় খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সংরক্ষিত ১০ নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর জেসমিন পারভীন জলিকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। শনিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে নগরীর ৯০/১২ মোল্লাপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দুপুরের দিকে তাকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেয়েন্দা পুলিশের এস আই বিধান চন্দ্র রায় বলেন, তিনি এ মামলার সন্দেহভাজন আসামি। তাকে পরবর্তীতে রিমান্ডের আবেদন করে এ মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) তৈমুর ইসলাম বলেন, এ্যাড. জেসমিন পারীভন জলি (৫৭) খুলনা সদর থানায় গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর দায়েরকৃত মামলার (যার নং—২৪) এজাহারনামীয় আসামী। এছাড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমানোর জন্য সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ক্যাডারদের সহযোগিতায় আন্দোলন ব্যাহত করতে বিভিন্ন প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করেছিল। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। জানা যায়, সেখ রফিকুজ্জামানের ছেলে রাফসান জানী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে খুলনা আযমখান কমার্স কলেজের সমন্বয়ক ছিলেন। ২০২৪ সালের ২৭ জুলাই শিববাড়ি মোড় সৌন্দর্যবর্ধনকারী ‘দূর্জয়’ স্থাপনার ওপর‘ স্টেপ ডাউন হাসিনা’ লেখা ব্যানার লাগিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং স্বৈরাচারী ফ্যাসিষ্ট সরকার পতনের দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিটি ছড়িয়ে পড়ায় ৩০ জুলাই পুলিশের মাধ্যমে জানীকে খুলনা সার্কিট হাউজে ডেকে নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। ওইদিন রাতে তাকে আন্দোলন থেকে সরে আসার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন। হুমকির মুখে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়। ৪ আগষ্ট বিকেল ৪ টার দিকে রাফসান জানীসহ অন্যান্য ছাত্রদের নেতৃত্বে একটি মিছিল রূপসা ঘাট হয়ে আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল শিববাড়ি মোড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ফাতেমা স্কুলের সামনে পৌছালে অস্ত্রধারী মো. রফিক ওরফে কসাই রফিক ও মো. সুমন ওরফে ভিপিসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জনের এক দল সন্ত্রাসী শর্টগান, বন্দুক, রমদা, হকিস্টিক, লোহার রড এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিলের ওপর হামলা ও গুলি বর্ষণ করে। অস্ত্রধারীরা পরপর দু’টি গুলি করলে জানীর বুকের ডানপাশে ও ডানহাতে বিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সহকর্মীরা চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা পুলিশের ভয়ে গোপনস্থানে নিয়ে চিকিৎসা করায়। এ ঘটনায় জানীর পিতা সেখ রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে গত বছরের ২৯ আগস্ট খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন, যার নং ১৮।