শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শান্তি আলোচনার পর ইউক্রেনে বৃহত্তম ড্রোন হামলা চালালো রাশিয়া সিরিয়ায় পুনরায় কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাংক অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মন্তব্য, ভারতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গ্রেফতার সৌদি আরবে অবৈধদের ধরতে অভিযান, গ্রেফতার ১৫ হাজার হায়দরাবাদের চারমিনারের কাছে ভবনে আগুন, শিশুসহ নিহত ১৭ যে কারণে ব্যর্থ হলো ভারতের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ভারতের জন্য আকাশসীমা আরও এক মাস বন্ধ রাখবে পাকিস্তান: রিপোর্ট ইরানে শিয়া মাজারে হামলার ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ—মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ টর্নেডোয় ২৭ জনের প্রাণহানি যে কারণে পেনাল্টি নেননি হালান্ড

বিপুল আমদানিতেও ভোজ্য তেলের বাজার অস্থিতিশীল

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস এক্সক্লুসিভ: ডবপুল আমদানিতেও ভোজ্য তেলের বাজার অস্থিতিশীল। বাজারে সয়াবিন তেলের জন্য হাহাকার চলছে। বর্তমানে চাহিদার অর্ধেকও সরবরাহ মিলছে না। অভিযোগ রয়েছে, বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজারের একাধিক সিন্ডিকেট ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে। খুচরা থেকে পাইকারি বাজার, কোথাও বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না। বরং হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে পাইকারি বাজার থেকে ভোজ্যতেল। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ নেই বললেই চলে। মূলত শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পাইকারি বাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভোজ্যতেলের লিটারপ্রতি দাম ৮ টাকা বাড়ানো হলেও বাজারে তার চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। মূলত এখন পুরোপুরি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে ভোজ্যতেলের বাজার। বাজার চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ হচ্ছে না। বরং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। আবার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হলেও অনেক কোম্পানি তেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সরবরাহ পাচ্ছে না। সূত্র জানায়, মিল মালিকরা বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাজারে তেলের সংকট চলছে। এভাবে চলতে থাকলে আসন্ন রমজানে ভোজ্যতেলের সংকট সমগ্র বাজারকে অস্থির করে তুলতে পারে। ভোজ্যতেল নিয়ে একটি চক্র সিন্ডিকেট করে বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারাও বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাজারে ভোজ্যতেলের তীব্র সংকটের সৃষ্টি হওয়ায় দামও হু হু করে বাড়ছে। অথচ সরকার দুই দফায় শুল্ক—কর কমালেও সুফল মিলছে না। বরং দাম আরো বেড়েছে। বর্তমানে দেশে ডলার সংকট এখনো চলমান রয়েছে। আমদানিকারকরা আগের মতো ভোজ্যতেল আমদানি করছে না। বিশ^বাজারে ভোজ্যতেলের দামও আগের চেয়ে বেড়েছে। ওসব কারণে ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তাছাড়া ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদন সংকট, বায়োডিজেলে পাম অয়েল ব্যবহারের পরিমাণ ৫ শতাংশ বৃদ্ধিজনিত কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির বুকিং রেকর্ড ছুঁয়েছে। এসব কারণে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। আবার কিছু কিছু কোম্পানি শর্তসাপেক্ষে তেল বিক্রি করছে। এদিকে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ভোজ্যতেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বাড়ানো হয়। এখন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়, যা এতোদিন ছিল ১৬৭ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৭ টাকা। খোলা পাম তেলের লিটারও ১৪৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয় ৮৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৮১৮ টাকা। অন্যদিকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে রোজায় বাজারে ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে প্রায় তিন লাখ টন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারি মাসে প্রায় চার লাখ টন সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি হয়েছে। আর তিন লাখ টন সয়াবিন তেল তৈরির কাঁচামাল সয়াবিনবীজ আমদানি হয়েছে। ওই বীজ মাড়াই করে পাওয়া যাবে প্রায় অর্ধলাখ টন সয়াবিন তেল। সব মিলিয়ে রোজার চাহিদার চেয়ে বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বেশি থাকবে। এ প্রসঙ্গে পাইকারি বাজারের ভোজ্যতেলের আড়তদাররা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দেশের বাজারে ফের পণ্যটির দাম বৃদ্ধির জন্য গত ৬ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীরা চিঠি দিয়েছে। অবশ্য নানামুখী চাপের মুখে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির ওই প্রস্তাব ফিরিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ফিরিয়ে নিলেও মিল মালিকরা সরবরাহ স্বাভাবিক করেনি। এখনো সরবরাহ বন্ধ রেখে কৃত্রিম সংকট জিইয়ে রাখা হয়েছে। যে কারণে বাজারে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com