এফএনএস এক্সক্লুসিভ: বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) নমুনা পরীক্ষায় বেশি লাগায় বন্দরে আটকে থাকে পণ্যের চালান। চট্টগ্রাম বন্দরে চার দিন পর্যন্ত বিনা ভাড়ায় পণ্য রাখা গেলেও পঞ্চম দিন থেকে ২০ ফুট লম্বা কনটেইনারের জন্য ছয় ডলার করে মাশুল গুনতে হয়। কিন্তু সাধারণত নমুনা পরীক্ষা করে পণ্যেল ছাড়পত্র দিতে বিএসটিআইএর ৬ কার্যদিবস লাগে। ফলে আমদানিকারকদের পণ্য খালাসে বাড়তি মাশুল গুনতে হচ্ছে। আর চাপছে ভোক্তার কাঁধে। অথচ আগে সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম) লাইসেন্স কিংবা আমদানি পণ্যের নমুনা উত্তোলনের পর অঙ্গীকারনামা দিয়ে পণ্য খালাস করা যেতো। কিন্তু এখন নতুন নিয়মে পরীক্ষার ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত পণ্যের শুল্কায়ন হচ্ছে না। ফলে প্রতিটি চালানেই আমদানিকারকদের বাড়তি মাশুল গুনতে হচ্ছে। আমদানিকারকদের সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আমদানিকৃত পণ্যের নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি পুরোপুরি বিএসটিআইয়ের ওপর নির্ভরশীল। বিএসটিআই যতো দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দিতে পারবে, ততো দ্রুত পণ্যের শুল্কায়ন হবে। আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী, ১৭৫ ক্যাটাগরির পণ্য খালাসের আগে বিএসটিআইয়ের ছাড়পত্র নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আগে বিএসটিআই পরীক্ষার জন্য নমুনা উত্তোলনের পর সাময়িক শুল্কায়ন করে আমদানিকারকদের পণ্য খালাসের সুযোগ দিতো কাস্টমস। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত শুল্কায়ন হতো। এরপরই আমদানি পণ্যও ব্যবহারের সুযোগ মিলতো। তাতে ব্যবসায়ীদের জরিমানা গুনতে হতো না। কিন্তু চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন নিয়ম চালু করে। ওই অনুযায়ী পণ্য শুল্কায়নের সফটওয়্যারে ১৭৫ ক্যাটাগরির পণ্য অন্তভুর্ক্ত করা হয়। ফলে অনলাইনে পণ্যের নমুনা পরীক্ষার সনদ বা ছাড়পত্র জমা না দিলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের পণ্য শুল্কায়ন করার সুযোগ নেই। অনলাইনে আবেদন ও সনদ জমা দেয়ার উদ্যোগ ভালো হলেও নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পেতে সময় লাগায় আমদানিকারকদের ক্ষতিপূরণ গুনতে হচ্ছে। সূত্র জানায়, আমদানিকারকদের যারাই ১৭৫ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানি করছে, তাদের সবাইকে বাড়তি মাশুল গুনতে হচ্ছে। ওসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে গুঁড়া দুধ, পরিশোধিত সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, ত্বক পরিচর্যার সামগ্রী ইত্যাদি। নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পর বন্দরে অনেক পণ্যের আমদানি চালান আটকা পড়েছে। তবে ঠিক কতো চালান আটকা পড়েছে কাস্টমস তার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে পারেনি। এদিকে এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ—কমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, পণ্যের নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি পুরোপুরি বিএসটিআইয়ের ওপর নির্ভর করে। বিএসটিআই যতো দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দিতে পারবে, ততো দ্রুত পণ্যের শুল্কায়ন হবে। অন্যদিকে এ বিষয়ে বিএসটিআইয়ের চট্টগ্রামের প্রধান গোলাম রাব্বানী জানান, সাধারণত নমুনা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দিতে ছয় কার্যদিবস লাগে। নতুন নিয়মে এখন যেহেতু ছাড়পত্র ছাড়া পণ্য খালাস সম্ভব নয়, সেজন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।