এফএনএস: ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গতকাল বুধবার বিকেলে নতুন ছাত্র সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’—এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আবু বাকের মজুমদার এবং সদস্যসচিব হিসেবে রয়েছেন জাহিদ আহসান। তবে এই ঘোষণাকে ঘিরে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং একাধিকবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কিছুটা বিলম্বে বিকেল ৪টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়করা মধুর ক্যান্টিনে উপস্থিত হন। এ সময় বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিজেদের পর্যাপ্ত সংখ্যক পদ দাবি করে বিক্ষোভ করেন। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলনের সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। মুখ্য সংগঠক হিসেবে তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী, মুখপাত্র হিসেবে আশরেফা খাতুন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম এবং সিনিয়র সদস্যসচিব হিসেবে রিফাত রশীদ দায়িত্ব পেয়েছেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখায় আহ্বায়ক করা হয়েছে আবদুল কাদেরকে এবং সদস্যসচিব হয়েছেন মহির আলম। এছাড়া মুখ্য সংগঠক হয়েছেন হাসিব আল ইসলাম এবং মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রাফিয়া রেহনুমা হৃদি। সংবাদ সম্মেলনের আগে থেকেই নতুন কমিটিতে কারা থাকবেন, তা নিয়ে বিতর্ক চলছিল। বিকেল ৪টার পরে নতুন কমিটির ঘোষণা আসার পর কিছু শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে স্লোগান দেন। তাঁরা দাবি করেন, নির্দিষ্ট কয়েকজন নেতাকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা বৈষম্যমূলক। এসময় ‘রিফাত রশিদের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এবং ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’— এমন স্লোগান দিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের ফলে কয়েকজন আহত হয়েছেন, তবে তাঁদের নাম—পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। সন্ধ্যার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে আরও এক দফা মারামারির ঘটনা ঘটে, যা ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। সংগঠনটির নেতারা জানান, ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে এবং কোনো রাজনৈতিক দলের অনুসারী হবে না। সংগঠনের মূলনীতি হবে ‘স্টুডেন্টস ফাস্টর্, বাংলাদেশ ফাস্টর্’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে এবং কোনো ধরনের বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না। সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায় করা। কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য আমরা কাজ করব না।’ এদিকে, ক্যাম্পাসে চলমান উত্তেজনার বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভক্তি ও বিরোধের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে এবং বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।