রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৫ পূর্বাহ্ন

মাহে রমজানের সওগাত

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০২২

এফএনএস : পবিত্র মাহে রমজানের আজ দশম দিবস, রহমত দশকের শেষ দিবস। আগামীকাল থেকে শুরু হবে মাগফিরাতের দ্বিতীয় দশক। সর্বশেষ হচ্ছে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির তৃতীয় দশক। মাহে রমজানের প্রতিটি দিবা-নিশিতে অসংখ্য জাহান্নামবাসীকে মুক্তি দেয়া হয় আর প্রতিটি ঈমানদার মুসলমানের একটি করে দোয়া কবুল করা হয়। এই মাসের প্রথম দশকে আল­াহর রহমতের বারিধারা সকল মু’মিন বান্দার অন্তরকে সিক্ত করে। এর ফলে বৃদ্ধি পায় ঈমানের তেজদীপ্ততা। ধন্য হয় প্রতিটি মানুষ। মহান আল­াহ পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেন ঃ নিশ্চয়ই কান, চোখ ও অন্তরকে আল­াহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এই আয়াতে প্রথমে কান পরে চোখ এবং অন্তরের কথা বলা হয়েছে। এগুলোর দায়-দায়িত্বের বিষয়ে আল­াহর কাছে জবাবদিহির কথাও বলা হয়েছে। তাই কানের রোজার গুরুত্ব অপরিসীম। কান যা শুনে সে জন্য তাকে আল­াহর কাছে জবাবদিতে হবে। তাই কান দিয়ে ভালো জিনিস শুনতে হবে এবং খারাপ শ্রবন থেকে কানকে দূরে রাখতে হবে। কারণ কান একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কানের মাধ্যমে বাইরের উদ্দীপক ভেতরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে নবজাত শিশু প্রথমে কানে শোনে। চোখ থাকা সত্তে¡ও সে কিছু দেখতে পায়না। অবশ্য একটি নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম করার পর শিশুর চোখে দেখার কাজ শুরু হয়। পবিত্র কুরআনের উপরোক্ত আয়াতে চোখের আগে কানের কথা উলে­খ করে আল­াহ তায়ালা সম্ভবতঃ সৃষ্টির এই রহস্য ও কানের গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। কাজেই কানের রোজাও অত্যন্ত গুরুত্ববহ। কানের রোজা হচ্ছে মন্দ ও অশ্লীল কথাবার্তা না শোনা, গান-বাজনাসহ নিষিদ্ধ কোন শব্দ যেন কানে প্রবেশ না করে সে জন্য চেষ্টা করা। পাপ ও গুণাহের কথা মানুষের অন্তরের ঘর , সদিচ্ছার প্রাসাদ ও জ্ঞানের বাগানকে ধ্বংস করে দেয়। মহান আল­াহ নেক বান্দাদের কানের একটি সৎ গুণ সম্পর্কে সুরা ফুরকানের ৭২ আয়াতে বলেছেন ঃ তারা যখন পথ চলে ও অতিক্রম করে তখন ভদ্রভাবে অতিক্রম করে। অর্থাৎ তারা খারাপ কথা ও অশ্লীল বাক্য না শুনে ভদ্রভাবে চলে যায়। সুরা আল-কিসাসের ৫৫ আয়াতে আল­াহ বলেছেন, তারা যখন বেহুদা কথা শোনে তখন তাঁরা তা এড়িয়ে যায়। ঈমানদার ও সৎ লোকদের সম্পর্কে আল­াহ এই সার্টিফিকেট দিয়েছেন। অপর দিকে যারা পাপী ও গুনাহগার তারা মন্দ ও অশ্লীল কথা, গালি-গালাজ, গান-বাজনাসহ নিষিদ্ধ বিষয়গুলো শোনে এবং আল­াহ প্রদত্ত শ্রবন শক্তিকে নষ্ট করে দেয়। এই প্রসঙ্গে সুরা আরাফের ১৭৯ আয়াতে আল­াহ বলেন ঃ আমরা জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও মানুষ তৈরি করেছি, যাদের অন্তর আছে কিন্তুু বুঝে না, চোখ আছে দেখেনা এবং কান আছে শোনে না। তারা হচ্ছে উদাসীন। এই আয়াতে কান, চোখ ও অন্তর নষ্ট হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সিয়াম সাধনা বা রোজার মাধ্যমেই কেবল এগুলো ঠিক রাখা যায়। একজন মুমিন মুসলমান রোজা রেখে পবিত্র কুরআনের বাণী শুনবেন এবং ঈমান, হেদায়াত ও কল্যাণের বাণী শিখবেন। কুরআন শুনলে অন্তর প্রশান্ত হয় এবং শয়তানের প্ররোচনা থেকে বাঁচা যায়। কানের খাদ্য হলো আল­াহর জিকির, উপকারী জ্ঞানবাক্য, সুন্দর কথা। এসবের মাধ্যমেই কানের সঠিক রোজা রাখা যায়। আল­াহ সকলকে তওফিক দিন। আমীন !

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com