এফএনএস: আজ ৫ মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের এক আরেকটি রক্তক্ষয়ী দিন। এই দিনে হরতাল কর্মসূচি চলাকালে টঙ্গীতে সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে ৬ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হন। খুলনা ও রাজশাহীতেও যথাক্রমে ২ জন ও ১ জন শহীদ হন। টঙ্গীতে শ্রমিকদের একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ২০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক স্বাধিকার আন্দোলনের সমর্থনে রাস্তায় নামেন। সেনাবাহিনী এই মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায়, যার ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিকেলে বায়তুল মোকাররম থেকে একটি বিশাল লাঠি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি জনগণের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আওয়ামী লীগ ব্যাংকিং লেনদেনের ওপর নতুন নির্দেশনা জারি করে। দলের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেন এবং বাঙালির সংগ্রামের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের আহ্বান জানান। সামনের দিনগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিতে আওয়ামী লীগ একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে, যেখানে আন্দোলন পরিচালনার জন্য সার্বক্ষণিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এদিকে, পাকিস্তানের সংহতি রক্ষায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তাহরিক—ই—ইশতিকলাল পার্টির প্রধান এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। ৫ মার্চের এই ঘটনা জাতির মুক্তি সংগ্রামকে আরও বেগবান করে তোলে, যা ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের জন্য বাঙালির চূড়ান্ত প্রস্তুতিকে ত্বরান্বিত করে।