এফএনএস আন্তজার্তিক ডেস্ক: বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের নতুন অধ্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি পণ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চীন। এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির পাল্টা জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে চীন জানিয়ে দিয়েছে, তারা আলোচনার পথও খোলা রেখেছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর ফেব্রুয়ারিতে চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল মাদকের প্রবেশ রোধে বেইজিং কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এমন অভিযোগ তুলে সম্প্রতি ট্রাম্প চীনের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক চাপান। ৪ মার্চ থেকে এই শুল্ক কার্যকর হয়, যার জবাবে চীন মার্কিন কৃষিপণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়।
চীনের নতুন শুল্কের আওতায় মুরগির মাংস, গরুর মাংস, শূকরের মাংস, সয়াবিন, ভুট্টা, ফলমূল, শাকসবজি ও দুগ্ধজাত পণ্য পড়বে। বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, “চীন কখনোই কোনো প্রকার হুমকি বা চাপের কাছে নতিস্বীকার করবে না। যুক্তরাষ্ট্রকে পরামর্শ দিচ্ছি, তারা যেন সংলাপ ও সহযোগিতার সঠিক পথে ফিরে আসে।”
এই বাণিজ্য যুদ্ধ মার্কিন কৃষকদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের অন্যতম প্রধান ক্রেতা চীন। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র চীনে প্রায় ২,৯২৫ কোটি ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করেছিল, যা ২০২২ সালের তুলনায় অনেক কম। চীন চাইলে অন্যান্য দেশ থেকেও বিকল্প কৃষিপণ্য সংগ্রহ করতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি খাতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের মূল সমর্থক কৃষকদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে চীনের এই পদক্ষেপ আলোচনার দুয়ারও খুলে রাখছে। বাণিজ্য যুদ্ধ যদি অব্যাহত থাকে, তবে শুল্কহার আরও বাড়তে পারে, যা উভয় দেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে যদি যুক্তরাষ্ট্র আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে পুরোপুরি বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট নিরসনের একমাত্র পথ হলো পারস্পরিক সমঝোতা। এখন দেখার বিষয়, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে পারে কিনা নাকি আরও কঠোর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হয়ে ওঠে।