এফএনএস: ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের গতি তীব্রতর হতে থাকে। ৬ মার্চ সারাদেশে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়, যা পূর্ববর্তী কয়েকদিনে ঘটে যাওয়া সামরিক হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে এক বিশাল প্রতিবাদ হিসেবে পরিগণিত হয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষ এদিন রাস্তায় নেমে আসে এবং একাত্মতা প্রকাশ করে। এই উত্তাল সময়ে পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এক বেতার ভাষণে পরিস্থিতির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলার জনগণকে দায়ী করার অপচেষ্টা চালান। তবে জনগণ তাঁর এ ধরনের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে এবং স্বাধীনতার লক্ষ্যে আরও সুসংগঠিত হয়। ৫ মার্চ ইয়াহিয়া খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টোর মধ্যে অনুষ্ঠিত গোপন বৈঠকের প্রতিফলন দেখা যায় ইয়াহিয়ার ভাষণে, যা বাঙালিদের আন্দোলন দমন করার একটি কৌশল হিসেবে গণ্য হয়। ৬ মার্চ ঢাকাসহ সারাদেশে পালিত হরতালে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। এই দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের দরজা ভেঙে ৩৪১ জন বন্দী পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে ৭ জন নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়। এদিকে, এদিন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও সামরিক শাসক লে. জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খানকে সরিয়ে তার স্থলে লে. জেনারেল টিক্কা খানকে নিয়োগ করা হয়। টিক্কা খানকে ‘বেলুচিস্তানের কসাই’ হিসেবে অভিহিত করা হতো। তার নিয়োগ বাংলার মানুষের মনে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এয়ার মার্শাল আসগর খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “পরিস্থিতি রক্ষা করার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। বাকি বিষয় আগামীকাল (৭ মার্চ) শেখ মুজিবের বক্তৃতায় জানতে পারবেন।”