সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কঠিন হয়ে পড়ছে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা কমে গেছে কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন মাগুরার শিশুটিকে দেখলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বললেন ‘শাস্তি থেকে ছাড় নয়’ মাগুরায় ‘শিশু ধর্ষকের’ ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বর ঘেরাও ছাত্র—জনতার সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ ও মেঘনা নদীরক্ষা প্রকল্প আটকে থাকায় প্রধান উপদেষ্টার বিস্ময় সংশোধন হচ্ছে আইন ধর্ষণ মামলার বিচার ৯০ দিনে শেষ করতে হবে: আইন উপদেষ্টা জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সবার আগে শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার করবে: ডা. শফিকুর রহমান মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: চার আসামির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন রিজার্ভ এখন ২১.৪০ বিলিয়ন ডলার ‘স্টারলিংক শহর বা প্রান্তিক অঞ্চলে হাইস্পিড ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা দেবে’

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: চার আসামির ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

এফএনএস: মাগুরায় এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে মাগুরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ আবেদন করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘চার আসামি কারাগারে আছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। এখনো রিমান্ড শুনানি হয়নি, প্রক্রিয়া চলছে।’ এদিকে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচার দাবিতে মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে গতকাল রোববার বেলা ১২টার দিকে অবস্থান নেন মাগুরা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা নানা স্লোগান দিয়ে আদালতে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আশ^াস পেয়ে দুপুর সোয়া দুইটার দিকে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মা বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার ৪ আসামি আগেই হেফাজতে ছিলেন। মামলার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি আরও বলেন, শিশুটির মা ঢাকা থেকে স্বামী ও বড় মেয়েকে দিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার পাঠান। মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৪)—এর ক/ ৩০ ধারায় ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগ করা হয়। আট বছরের এই শিশুটি গত বুধবার বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও তার অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। পরে গত বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। শিশুটিকে আরও উন্নত চিকিৎসার গতকাল বিকেলে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) স্থানান্তর করা হয়। গত শনিবার দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে শিশুটির মা উল্লেখ করেন, বড় মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি হিটুর স্ত্রী ও আরেক ছেলেও জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারা শিশুটিকে হত্যার চেষ্টা করেন। এজাহারে আরও বলা হয়, চার মাস আগে বড় মেয়ের সঙ্গে সজিবের বিয়ে হয়। এর পর থেকে বড় মেয়েকে তার শ^শুর অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ওই পরিবারের সবাই জানলেও প্রতিবাদ করেননি। মামলায় বলা হয়েছে, গত বুধবার রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে শিশুটি ঘুমায়। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই। মেঝেতে পড়ে আছে। তখন সে বড় বোনকে জানায়, গোপনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। বিষয়টি হালকাভাবে নেন তিনি। পরদিন সকাল ৬টার দিকে শিশুটি আবার বোনকে একই কথা জানান। তখন তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে কী হয়েছে জিজ্ঞেস করলে শিশুটি জানায়, রাতে দুলাভাই দরজা খুলে দিয়েছিল। তখন তার বাবা (হিটু শেখ) তার মুখ চেপে ধরে অন্য কক্ষে নিয়ে যায়। এ সময় চিৎকার করার চেষ্টা করলে গলা চেপে ধরা হয়েছিল। পরে তাকে বোনের কক্ষে ফেলে রেখে যায় হিটু শেখ। বোন বিষয়টি মোবাইল ফোনে তার মাকে জানাতে গেলে সজীব ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করেন। ঘটনা কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেন। পরে দুই বোনকে দুই কক্ষে আটকে রাখা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে সজিবের মা মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে শিশুটিকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান তিনি। মেয়েটির বড় বোন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার ২০ দিন আগে সন্ধ্যায় বাড়িতে কেউ ছিল না। তিনি ঘরে আলো জ্বালিয়ে টয়লেটে যান। সেখান থেকে ফিরে দেখেন ঘরে আলো বন্ধ। এ সময় হঠাৎ একজন পেছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে। উচ্চতা ও অন্যান্য বিষয় দেখে তিনি বুঝতে পারেন, জড়িয়ে ধরা ব্যক্তি তার শ^শুর হিটু শেখ। বিষয়টি স্বামী সজিবকে তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। পরে বাবার বাড়ি চলে যান। আর স্বামীর বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন না। বাবা—মা বুঝিয়ে ছোট বোনকে সঙ্গে করে পাঠিয়ে দেন শ^শুর বাড়ি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com