এফএনএস: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পাঁচ মামলার আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ‘মব সৃষ্টি’ করে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি—ব্লকের ৭ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আসামির নাম গোলাম মোস্তফা। তিনি জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত। জুলাই আন্দোলনের সময় নানককে ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পাঁচটি হত্যা মামলা রয়েছে। মামলাগুলো হলো— মোহাম্মদপুর থানায় মামলা নম্বর—৬৯, রামপুরা থানায় মামলা নম্বর—১৮, বাড্ডা থানায় মামলা নম্বর—১৬, ক্যান্টমেন্ট থানায় মামলা নম্বর—১৬ ও চকবাজার থানায় মামলা নম্বর— ৫৬। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে লালমাটিয়ার বি—ব্লকের ৭ নম্বর রোডে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের একটি টিম আসামি গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করতে যায়। তাকে গ্রেফতার করে হাতকড়া পরানোর সময় আশপাশে থাকা ৮—১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নেন। এসময় ধস্তাধস্তিতে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া একজন সিকিউরিটি গার্ড বলেন, এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মালিক আমাদের গোলাম মোস্তফা স্যার স্কুল থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠছিলেন। পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল। তার এক হাতে হাতকড়াও পরায়। সঙ্গে সঙ্গে আমরা যারা ছিলাম সবাই মিলে পুলিশকে ঘেরাও করে স্যারকে ভেতরে নিয়ে যাই। তখন পুলিশের সঙ্গে আমাদের লোকজনের ধাক্কাধাক্কি হয়। এসময় আরও দুই সিকিউরিটি গার্ড সঙ্গে ছিলেন। তারা বলেন, আমাদের সামনে থেকে স্যারকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে, এটা কীভাবে সম্ভব। গ্রেফতার করতে আসছে দেখে আমরা সবাই পুলিশকে বাধা দিয়েছি। পুলিশকে ওই সময় ওয়ারেন্ট দেখাতে বলেছি। তারা মোবাইল ফোনে কাগজ দেখায়। কিন্তু কোনো কাগজপত্র সঙ্গে আনেনি। আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা জানতে চাইলে মোহাম্মদ থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান বলেন, মব সৃষ্টি করে পুলিশকে বাধা দিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেয় স্থানীয় কিছু লোকজন। এ ঘটনায় তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ—পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, গতকাল বুধবার মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের একটি টিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পাঁচ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে লালমাটিয়া এলাকায় যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসররা দলবল নিয়ে সেখানে ছিলেন। গ্রেফতারের সময় ওই আসামির লোকজন মব সৃষ্টি করে পুলিশকে বাধা দেয়। গ্রেফতার করতেই দেয়নি পুলিশকে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। খুব শিগগির আসামিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে— বলেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।