শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ভারতে বিশ^বিদ্যালয়ের খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করায় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

এফএনএস আন্তার্জতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশের মীরাটে একটি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের খোলা জায়গায় নামাজ আদায়ের অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার হোলি উৎসব চলাকালীন সময়ে ক্যাম্পাসে কিছু শিক্ষার্থী নামাজ আদায় করেন, যা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে পুলিশ এই গ্রেপ্তার অভিযান চালায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আইআইএমটি বিশ^বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে খোলা জায়গায় নামাজ আদায়ের ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে, এক হিন্দু সংগঠনের সদস্য কার্তিক হিন্দু নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে খালিদ প্রধান (যিনি খালিদ মেওয়াতি নামেও পরিচিত) নামে ওই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিশ^বিদ্যালয় কতৃর্পক্ষ অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে খালিদ প্রধান এবং তিনজন নিরাপত্তারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। পাশাপাশি, তারা অভিযোগ করেছে যে, খালিদ প্রধানই ওই ভিডিওটি ইচ্ছাকৃতভাবে অনলাইনে আপলোড করেছিলেন এবং এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে।
গঙ্গা নগর থানার কর্মকর্তা অনুপ সিং জানিয়েছেন, খালিদ প্রধানের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) ধারা ২৯৯ অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে অবমাননাকর কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি (সংশোধনী) আইন, ২০০৮—এর প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
আইআইএমটি বিশ^বিদ্যালয়ের মুখপাত্র সুনীল শর্মা জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ তদন্তে দেখা গেছে যে, শিক্ষার্থীরা খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করেছিলেন এবং সেই ভিডিওটি ইচ্ছাকৃতভাবে সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করা হয়। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের মতে, এই ঘটনার মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে। তাদের দাবি, ভিডিওটিতে অনেক শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে এবং এটি হোলি উৎসবের সময় উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়ানো হয়েছে।
এদিকে, নামাজ আদায় করায় একজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা এবং বিশ^বিদ্যালয় কতৃর্পক্ষের কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। অনেকেই এই ঘটনাকে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
এই ঘটনার সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হোলি উৎসব এবং মুসলিমদের রমজান মাসের দ্বিতীয় জুমা একই দিনে পড়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে খোলা জায়গায় নামাজ আদায়ের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com