শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ইউক্রেন—রাশিয়া শান্তি চুক্তি: ন্যাটো থেকে দূরে রাখার কঠিন শর্ত

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

এফএনএস আন্তার্জতিক ডেস্ক: ইউক্রেন সংকট নিরসনের লক্ষ্যে যে কোনো সম্ভাব্য শান্তি চুক্তিতে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দাবি করেছে রাশিয়া। মস্কোর পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ইউক্রেনকে কখনোই ন্যাটোর সদস্য করা যাবে না এবং ন্যাটোর কোনো সামরিক উপস্থিতি দেশটিতে সহ্য করা হবে না।
গতকাল সোমবার রাশিয়ার উপ—পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার গ্রুশকো বলেন, “আমরা চাই, শান্তি চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকুক যে ইউক্রেন কখনোই ন্যাটোর অন্তভুর্ক্ত হবে না। পাশাপাশি, সেখানে কোনো বিদেশি সেনা মোতায়েনের সুযোগ থাকবে না।”
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন। তিনি ৩০ দিনের একটি সংঘর্ষবিরতি চুক্তির জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের সমর্থন চাইছেন, যা ইউক্রেন ইতোমধ্যেই মেনে নিয়েছে। তবে পুতিন জানিয়েছেন, চুক্তিটি কার্যকর হতে হলে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকে ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, “শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত কিয়েভের, মস্কোর নয়।” অস্ট্রেলিয়াও এ ব্যাপারে সহায়তা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে।
তবে, রাশিয়া পশ্চিমা এই পরিকল্পনার কঠোর বিরোধিতা করছে। সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, “যদি ন্যাটোর শান্তিরক্ষী সেনারা ইউক্রেনের মাটিতে প্রবেশ করে, তাহলে আমরা ধরে নেব, এটি ন্যাটোর সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের সূচনা।”
গ্রুশকো আরও বলেন, “শান্তি আলোচনার পর নিরস্ত্র পর্যবেক্ষক বাহিনী মোতায়েন নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে, তবে কোনো সামরিক জোটের সেনা ইউক্রেনে উপস্থিত থাকতে পারবে না।”
রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের দখল নিয়েছে এবং শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে এই ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিশেল ওয়াল্টজ বলেন, “ইউক্রেন যদি ন্যাটোয় যোগ দিতে চায়, তাহলে তাকে কিছু ছাড় দিতে হবে। রাশিয়া দখল করা অঞ্চলগুলো তাদের অধীনে রাখতে চায় এবং ন্যাটো সদস্যপদ ছাড়াই কিয়েভকে চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে।”
তবে, সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে তারা কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার শর্ত মেনে নেবে না। এদিকে, সংঘর্ষবিরতি চুক্তি নিয়ে পুতিন আশাবাদী হলেও রাশিয়ার নিরাপত্তা শর্ত নিশ্চিত না হলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিশ^ সম্প্রদায় ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে শান্তি আলোচনা নিয়ে আশাবাদী হলেও রাশিয়ার কঠোর শর্ত ও পশ্চিমা হস্তক্ষেপ বিষয়টি আরও জটিল করে তুলছে। এখন দেখার বিষয়, উভয় পক্ষ কতটা ছাড় দিয়ে শান্তি আলোচনায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com