তালা প্রতিনিধি \ তালায় শালিকা ডিগ্রী কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক ও জালালপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এস.এম বিপ্লব কবিরের হত্যা মামলা দীর্ঘ ১১ বছর পর সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টে্রট আমলী আদালত— ৩ বিজ্ঞ বিচারক মোঃ মহিদুল হাসান সিআর ৮৪/২৫ গ্রহণ পূর্বক শুনানি শেষে ২৩/০৩/২০২৫ তারিখের মধ্যে এজাহার হিসেবে গ্রহন করার জন্য ওসি তালা থানাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। উক্ত মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার,সাতক্ষীরা চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সাবেক এমপি এড. মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাবেক ওসি ডিবি এ কে এম আজমল হুদা, সাবেক ওসি তালা থানা আবু বক্কর সিদ্দিকী সহ ২২ জনের নামে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ প্রদান করেছেন বিজ্ঞ আদালত। বিজ্ঞ আদালতের আদেশের কপি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তালা থানায় পৌঁছায়নি। মামলার বিবরণে প্রকাশ, তালা থানার জালালপুর ইউনিয়নের দোহার গ্রামের মৃত শের আলী শেখের পুত্র প্রভাষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৫০) বাদী হয়ে সাতক্ষীরা আমলি —৩ এর আদালতে বাদীর আপন ছোট ভাই এস এম বিপ্লব কবির শালিকা ডিগ্রী কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। তাকে গত ১৮/৭/২০১৪ তারিখে রাত্র ১২ টার সময় এক নম্বর সাক্ষী ছবেদ মোড়লের বাড়িতে কথক কথক আসামী আগ্নেয় অস্ত্র সহ প্রবেশ করে বল প্রয়োগ পূর্বক ১ নং সাক্ষীর দু,পা ভেঙ্গে ফেলে এবং তার ভাইকে আটক করিয়া মারপিট করে আধা মরা অবস্থায় আটুলিয়া নিয়ে পুলিশের সরকারি গাড়িতে করে ইসলামকাটি ব্রিজের পাশে যাত্রী ছাউনির সামনে রাত্র অনুমান দুইটার সময় ফাঁকা জায়গায় গাড়ি থেকে তার ভাইকে নামাইয়া চোখ বাধা অবস্থায় পরপর দুটিগুলির শব্দ বাদী ও সাক্ষী শুনতে পান। এই সময় বাদী বুঝতে পারেন ক্রসফায়ারের নামে তার ভাইকে হত্যা করা হইয়াছে। বাদিসহ সাক্ষীরা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দুটি মোটরসাইকেলে করে যেয়ে দেখতে পান তার ভাই জীবত নেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাদি ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশাংঙ্কায় অভিযোগ দায়ের করিতে সাহস পাননি। গত ৫ ই আগস্ট বিগত সরকার পতনের পর মামলা করিবার পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় মামলা দায়ের করেছেন মর্মে তারা অভিযোগ পত্র উল্লেখ করেছেন। অভিযোগ পত্রে আসামি করা হয়েছে, সাবেক পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সাতক্ষীরা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক (ডিবি) ওসি একেএম আজমল হুদা, ডিবি পুলিশের কনস্টেবল হাসিবুর রহমান, কনস্টেবল ফারুক চৌধুরী, কনস্টেবল রাসেল মাহমুদ, কনস্টেবল শিকদার মনিরুজ্জামান, তালা থানার সাবেক ওসি আবু বকর সিদ্দিক, তালা থানার সাবেক এস.আই আকরাম হোসেন, তালা থানার সাবেক এ.এসআই গোলাম সরোয়ার, জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি, তালার শিবপুর গ্রামের শেখ আবু জাফর, দোহার গ্রামের যুবলীগ নেতা শাহিন শেখ, জালালপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি জালালপুর গ্রামের আমিরুল শেখ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী দোহার গ্রামে রুহুল আমিন শেখ মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা দোহার গ্রামের শেখ আমজাদ আলী, যুবলীগ নেতা দোহার গ্রামের ইদ্রিস সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা দোহার গ্রামের কামরুল সরদার, যুবলীগ নেতা দোহার গ্রামের আক্তারুল সরদার, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সেক্রেটারী শ্রীমন্তকাটি গ্রামের মহিবুল্লাহ মোড়ল, উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ কানাইদিয়া গ্রামের শেখ আনারুল ইসলাম ও জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আটঘরা গ্রামের রাম প্রসাদ দাশ ২২জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা ১০—১৫ জনের নামে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে ওসি তালা থানাকে ২৩ শে মার্চের মধ্যে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। ২২৮ তাং ১৬/৩/২০২৫ স্মারকে বিজ্ঞ আদালত তালা থানা ওসি বরাবর আদেশের কপি প্রেরণ করেছেন। তালা থানা ওসি শেখ শাহিনুর রহমান জানান, বিজ্ঞ আদালতের আদেশের কপি তিনি পাননি বা এ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম জানান, এলাকাবাসী প্রভাষক বিপ্লবকে গুলি করে হত্যার বিষয়টি কেউ ভালোভাবে নেয়নি। জনগণ ফুসে উঠেছিল খুনিদের বিরুদ্ধে কিন্তু কিছু করার ছিল না তাদের! কলেজের গণিত বিভাগের জনপ্রিয় একজন শিক্ষককে যারা খুন করালো তাদের সকলের নাম তিনি জীবনের নিরপত্তার কারণে অভিযোগ পত্রে দিতে পারেননি। তবে অজ্ঞাতনামা ১০—১৫ জনকে আসামী শ্রেনী ভুক্ত করা হয়েছে। ওই সকল কুচক্রী খুনিরা তারা অজ্ঞাতনামার মধ্যে অভিযুক্ত হবেন বলে দাবি জানিয়েছেন।