শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
আসাদুজ্জামানের সুমন আর নেই কালিগঞ্জে ইয়াবা মোটরসাইকেলসহ তিন জন আটক আশাশুনি এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ১ম দিনে অনুপস্থিত ৯৯ আশাশুনিতে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের ভাঙন দূর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ খুলনা খান বাহাদুর আহছানউল্লা বিশ^বিদ্যালয়ে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত খুলনায় মেট্রোপলিটন পুলিশের কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত খুলনায় যৌথ অভিযানে জুযা খেলার সরঞ্জাম নগদ টাকা সহ ৪ জন আটক পানির অভাবে কাশিমাড়ীর সিংহভাগ জমি ধান চাষ থেকে বঞ্চিত বিষ্ণুপুর কলা প্রদর্শনীর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জের মুকুন্দপুর দারুস সুন্নাত মাদ্রাসায় ইছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিল ও হিজবুল্লাহ সম্মেলন

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫

এফএনএস: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। গত বুধবার হোয়াইট হাউজে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি, যাকে ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে অনেক দেশ। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। এতদিন দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে উপস্থিত সাংবাদিকসহ সমবেতদের উদ্দেশে বক্তব্যের শুরুতেই ট্রাম্প বলেন, ‘আজ খুব ভালো খবর’ থাকবে। এই দিনকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিবস’ এবং নতুন শুল্ক আরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, এই দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষা করছে। বাংলাদেশের প্রধান দুই রপ্তানি বাজারের একটি যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের একটি বড় অংশ রপ্তানি হয় দেশটিতে। যুক্তরাষ্ট্রে বছরে বাংলাদেশের রপ্তানি হয় প্রায় ৮৪০ কোটি ডলার, যা প্রধানত তৈরি পোশাক। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি দাঁড়ায় ৭৩৪ কোটি ডলারে। নতুন করে উচ্চ মাত্রায় এই শুল্ক আরোপে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। ট্রাম্পের পাল্টা এই শুল্ক আরোপে ভারতের পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। পাকিস্তানের পণ্যের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ৩৪ শতাংশ। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের পণ্যের ওপর ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৪৪ শতাংশ, তাইওয়ানের পণ্যে ৩২ শতাংশ, জাপানের পণ্যে ২৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের পণ্যে ৩৬ শতাংশ, সুইজারল্যান্ডের পণ্যে ৩১ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ, মালয়েশিয়ার পণ্যে ২৪ শতাংশ, কম্বোডিয়ার পণ্যে ৪৯ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের পণ্যে ১০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকার পণ্যে ৩০ শতাংশ, ব্রাজিলের পণ্যে ১০ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের পণ্যে ১০ শতাংশ, ইসরায়েলের পণ্যে ১৭ শতাংশ, ফিলিপাইনের পণ্যে ১৭ শতাংশ, চিলির পণ্যে ১০ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ, তুরস্কের পণ্যে ১০ শতাংশ, কলম্বিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ আরোপ করা হয়েছে। অন্যান্য যেসব দেশের পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের পণ্যে ৪৪ শতাংশ, লাওসের পণ্যে ৪৮ শতাংশ এবং মাদাগাস্কারের পণ্যের ওপর ৪৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। শুল্ক আরোপের ঘোষণাকে ‘আমেরিকা ফাস্টর্’ নীতির প্রতিফলন উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, আজকের দিনকে আমেরিকান শিল্পের ‘পুনর্জন্ম’ এবং আমেরিকাকে ‘আবার সম্পদশালী’ করার দিন হিসেবে স্মরণ করা হবে। এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বাধার মুখে রয়েছে। অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা আরও খারাপ অবস্থা তৈরি করেছে। বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মেধাসত্ত চুরিসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ আরোপের অভিযোগ করেছেন তিনি। ফলাফল বিশ্লেষণ করছে বাংলাদেশ: এদিকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপরে ৩৭ শতাংশ শুল্ক বসানোয় বাংলাদেশি রফতানি পণ্য বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপরে নেতিবাচক প্রভাব কতটুকু পড়তে পারে এ বিষয়ে কাজ করছে সরকার। বাংলাদেশি পণ্য ওপর আগে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ছিল ১৬ শতাংশ। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যেমন অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তেমনই বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোর ওপরও শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেমন—ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ৪৪ শতাংশ বা মিয়ানমারের ওপর ৪৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। ফলে রফতানির ক্ষেত্রে এর প্রভাব কী পড়তে পারে সেটি হিসাব করে বের করতে হবে। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের একটা সূত্র জানায়, এ বিষয়ে এখন আরও জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। আগামী তিন থেকে ছয় মাস এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে সূত্র জানায়, বাংলাদেশ বেশি রফতানি করে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এখন বেশি পণ্য আমদানি করে আমাদের দেখাতে হবে যে বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা হলেও কমছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, আমরা সয়াবিন তেল, তুলা, গম অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করি। এ সময় আমরা যদি কিছুটা বেশি পরিমাণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করি তাহলে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ কমে আসবে। মোটকথা আমাদের এখন দেখাতে হবে, আমরা বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর বিষয়ে সিরিয়াস। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক পণ্য বেশি রফতানি করে। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশ, বিমানসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে থাকে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com