শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

যেসব কারণে খাবারের প্রতি হঠাৎ আগ্রহ বাড়তে পারে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

উৎসবে আনন্দ করতে মানুষ পরিবারের সদস্যদের কাছে যায়। এই সময় পারিবারিক, সামাজিক সম্পর্ক আর দৃঢ় হয়। আবার এর উল্টোটাও ঘটে। একাধিক মানসিক চাপে হতাশ হয়ে মানুষ অধিক খাবার খাওয়া শুরু করে। বিশেষ করে ক্যালোরি বৃদ্ধি করে এমন খাবারগুলো তখন বেশি বেছে নেয়। মানসিক চাপ বাড়লে খাবার খাওয়ার প্রতি কেন আগ্রহ বাড়ে? এই বিষয়ে মনোবিদরা বলছেন, ‘‘মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মানুষ খাবারের সাহায্য নেয়। যার যে খাবারটা খেলে তৃপ্তি বোধ হয়, সে সেই খাবারই মানসিক চাপের মধ্যে বেশি খেতে থাকে। যাকে বলে ‘কমফোর্ট ফুড’। এই কমফোর্ট ফুড ক্ষণিকের জন্য স্ট্রেস থেকে মুক্তিও দেয়।’’ কেন এমন হয়? অধিক মানসিক চাপে শরীরের কর্টিসল হরমোন নির্গত হয়। এই হরমোন উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়ার আকাক্সক্ষা বাড়িয়ে দেয়। কিংবা যে খাবার খেলে মানুষ তৃপ্তি অনুভব করে, সেগুলোই বেশি করে খাবার ইচ্ছা জাগিয়ে তোলে। ‘কমফোর্ট ফুড’ তৃপ্তি আনে এবং ডোপামিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়। তাই স্ট্রেসের মধ্যে মুখরোচক খাবার খেলে একটু হলেও স্বস্তি মেলে। কিন্তু এটা সাময়িক। ভারতীয় মনোবিদ ডা. সরখেল বলেন, ‘‘কমফোর্ট ফুড খেয়ে স্ট্রেস থেকে সাময়িক রিলিফ মেলে। কিন্তু এটা কোনও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নয়। বরং এতে ওজন বাড়ে। আর ওবেসিটি অনেকের ক্ষেত্রে স্ট্রেসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’’ এই সমস্যা এড়াতে হলে প্রতিদিন শরীরচর্চা করুন। নিজেকে আলাদা করে সময় দিন। প্রার্থনা করতে পারেন। শ^াস—প্রশ^াসের ব্যায়াম করতে পারেন। শুনতে পারেন প্রিয় গান, প্রিয় কোনো সুর। আবার নিজের খুব প্রিয় কোনো স্থানে গিয়ে কিছু সময় থাকতে পারেন। সুতরাং কোনো সম্পর্ককে অধিক গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিজেকে গুরুত্বহীন করে তুলবেন না।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

দিনটা শুরু হবে চায়ে, না কফিতে? জানুন কোনটা ভালো সকালের শুরুটা কেমন হয়, পুরো দিনের ওপর তার একটা ছাপ পড়ে। কেউ সকালে উঠে চায়ের কাপ হাতে না পেলে যেন দিনই শুরু করতে পারেন না, আবার কেউ আছেন কফির তীব্র গন্ধ ছাড়া সকাল কল্পনাই করতে পারেন না। এই দুটি পানীয় শুধু স্বাদের জন্য নয়, বরং অভ্যাস, সংস্কৃতি এবং মানসিক প্রশান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—সকালের জন্য কোনটা ভালো? চা নাকি কফি? এই নিয়ে নানান জনের নানান মত। চাপ্রেমীরা বলবেন চায়ের কথা তেমনি কফিপ্রেমীদের ভোট থাকবে কফিতে। আসুন জেনে নেই আসলে স্বাস্থ্যকর দিক থেকে কোনটি সবচেয়ে ভালো। বিশ^জুড়ে কোটি কোটি মানুষ দিনের শুরু করে এক কাপ চা দিয়ে। বিশেষ করে উপমহাদেশে চা শুধু পানীয় নয়, এক ধরনের সংস্কৃতি। আমাদের দেশে সকালে বাসার বারান্দায় বসে কড়া লাল চা কিংবা দুধ চা পান করার অভ্যাস অনেক পুরোনো। চায়ে উপস্থিত থাকে ক্যাফেইন, তবে তা কফির তুলনায় অনেক কম। এজন্য চা ধীরে ধীরে কাজ করে, মাথা ঠান্ডা রাখে এবং এক ধরনের প্রশান্তি দেয়। এতে থাকা এল—থিয়ানিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মনোযোগ বাড়ায়। যাদের সকালে অতিরিক্ত উত্তেজনা বা নাড়া—চাড়া একদম পছন্দ নয়, তাদের জন্য চা একটি আদর্শ পানীয় হতে পারে। অন্যদিকে কফি হচ্ছে সকালের সেই পানীয়, যা অনেকের চোখ খুলে দেয়। যাদের সকালে কাজে নেমে পড়তে হয় দ্রুত, তাদের কাছে কফি যেন এক অলৌকিক শক্তির উৎস। এতে থাকা বেশি পরিমাণ ক্যাফেইন খুব দ্রুত কাজ করে, মনোযোগ বাড়ায়, ক্লান্তি দূর করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক কাপ ব্ল্যাক কফি সকালবেলা শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে এবং ফ্যাট বার্নিংয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাই যারা স্বাস্থ্য সচেতন, তাদের অনেকেই সকালে কফিকেই বেছে নেন। কোনটা বেশি স্বাস্থ্যকর? চা এবং কফি—দু’টোর মধ্যেই রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা। চায়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ক্যাটেচিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস হৃদরোগ, ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। গ্রিন টি তো একেবারে স্বাস্থ্য সচেতনদের প্রিয়। অন্যদিকে কফির মধ্যেও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নানা উপকারী উপাদান যা টাইপ—২ ডায়াবেটিস, পারকিনসনস ডিজিজ এবং অ্যালজাইমার্স প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। তবে একটা বড় পার্থক্য হলো—কফির অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে উদ্বেগ, ঘুমের সমস্যা, হৃদকম্পন ইত্যাদি হতে পারে। অন্যদিকে চা তুলনামূলকভাবে বেশি সহনীয় এবং দীর্ঘমেয়াদে কম পাশ^র্প্রতিক্রিয়ামূলক। জীবনধারা ও অভ্যাস নির্ভর সকালে চা ভালো, না কফি—এই প্রশ্নের উত্তর অনেকাংশেই নির্ভর করে ব্যক্তির জীবনধারা ও স্বাস্থ্যের ওপর। কেউ যদি খুব সকালে উঠে ধীরে ধীরে দিন শুরু করেন, কিছুক্ষণ বই পড়ে, প্রার্থনা করেন বা নিজেকে সময় দেন—তাদের জন্য চা একটি উপযুক্ত সঙ্গী। আবার অফিস শুরু হতেই যদি ছুটতে হয়, মাথা ঠান্ডা রাখতে না পারলে সমস্যা হয়, তবে এক কাপ কফি প্রয়োজনীয় জ্বালানির মতো কাজ করে। অনেকেই আবার দুটোই পছন্দ করেন—সকালে কফি, বিকেলে চা। এতে শরীর ও মন দুটোকেই যথাযথভাবে সাড়া দেওয়া যায়।চা বনাম কফি, এই লড়াইয়ে নির্দিষ্ট করে জেতার কেউ নেই। বরং আপনার শারীরিক চাহিদা, মানসিক অবস্থা, এবং সকালের অভ্যাস—এই তিনটাই ঠিক করে দেবে কোনটা আপনার জন্য উপযুক্ত। কেউ হয়তো সকালে এক কাপ লাল চা নিয়ে প্রকৃতির শব্দে মুগ্ধ হন, আবার কেউ কফির তীব্রতায় জেগে উঠে নতুন দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হন। দিনের শুরুটা হোক যেভাবেই চা বা কফি, দুটোই যদি আপনাকে ইতিবাচকতায় ভরিয়ে তোলে, তবে সেটাই আপনার জন্য সেরা সকাল।

© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com