এফএনএস বিদেশ : ইরানের পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোকে দ্রæত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহŸান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গতকাল শুক্রবার প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এই মন্তব্য করেন। খবর এএফপির। মার্কো রুবিও বলেন, ‘ইউরোপকে খুব শিগগিরই একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে—স্ন্যাপব্যাক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে কি না—কারণ ইরান স্পষ্টতই বর্তমান চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।’ প্রসঙ্গত, ‘স্ন্যাপব্যাক’ হলো একটি ক‚টনৈতিক বা আন্তর্জাতিক আইনগত প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কঠোর নিষেধাজ্ঞাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনর্বহাল করা যায়, যদি কোনো দেশ কোনো চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে। ২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান জয়েন্ট ক¤িপ্রহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের একটি চুক্তিতে পৌঁছায়। চুক্তি মোতাবেক ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়। শর্ত মেনে চলার বদলে সে সময় ইরানের ওপর আরোপ করা বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার ঐতিহাসিক সেই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। ওয়াশিংটন চুক্তি থেকে সরে আসার আগে তেহরান চুক্তির শর্ত মেনে চললেও পরবর্তীতে দেশটি ধীরে ধীরে তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে। মার্কো রুবিও জোর দিয়ে বলেন, ‘ইরান চুক্তির বাইরে চলে গেছে, তাদের ওপর আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা অপরিহার্য।’ ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ওয়াশিংটন আগের চুক্তি ভেঙে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনা আবার শুরু করে। গত সপ্তাহান্তে ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা শুরু করে। তবে সেখানে ইউরোপীয় শক্তিগুলোর উপস্থিতি ছিল না। আজ শনিবার ওমানের মধ্যস্থতায় ইতালিতে আরেকটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার ইরান সফরে গিয়ে জাতিসংঘের পারমাণবিক তদারকি সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে একটি চুক্তি অর্জনের সময় দ্রæত ফুরিয়ে আসছে। ইরান সফরের আগে ফরাসি পত্রিকা লে মন্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেছিলেন, তেহরান ‘পারমাণবিক বোমা অর্জনের খুব কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছে।