এম এম নুর আলম \ আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের গুনাকরকাটি ব্রীজ টু রুদ্রপুর ওয়াপদার উপর দিয়ে নির্মানাধীন কার্পেটিং সড়কের কাজ নিয়ে ধ্বংবাত্মক কারবার শুরু হয়েছে। কাজে কেবল বাধা নয় বরং মেশিন দিয়ে খুড়ে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবহৃত মালামাল ফেলে দিয়ে সরকারি অর্থের ক্ষতিসাধন কারবারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুনাকরকাটি থেকে রুদ্রপুর পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়ক দিয়ে মাছখোলা হয়ে সদর উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী কলারোয়া তালা উপজেলার মানুষ যাতয়াত করে থাকে। দীর্ঘকাল যাবৎ ওয়াপদার উপর দিয়ে মানুষের যাতয়াত থাকলেও বর্ষা মৌসুমে এলাকার মানুষের পথচলা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এলাকার হাজার হাজার বিঘা জমির ধান পরিবহনসহ মৎস্যচাষীরা মৎস্য ঘেরে যাতয়াত ও মাছ পরিবহনের জন্য একমাত্র সড়ক হিসাবে এ পথই ব্যবহার করে থাকে। মানুষের কষ্ট নিবারণ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য এলজিইডি সড়কটি কার্পেটিং করার কাজ করার পরিকল্পনা শুরু করে। এরই অংশ হিসাবে প্রায় ৩ কিঃমিঃ সড়কে কার্পেটিং করার জন্য ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। ২০২১ সালে কাজ উদ্বোধন করা হয়। যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেই থেকে অদ্যাবধি মাটির কাজ, বালির কাজ ও খোয়াবালি ফেলানোর পর রুলিং এর কাজ করা হয়ে গেছে। বর্তমানে কার্পেটিং এর কাজ শুরুর তোড়জোড় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যে কার্পেটিং শুরু করার কথা বলে জানাগেছে। কিন্তু কোন রকম বাধা নয়, কারো কাছে কোন প্রতিবাদ নয়, কাউকে কিছু জানানো নয়, বলতে গেলে আচমকা ও হঠাৎ করে শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যার একটু পূর্বে বেকু মেশিন লাগিয়ে ওয়াপদা কর্তৃপক্ষ সড়কের উপর থেকে খোয়া-বালি উঠিয়ে পাশে ফেলে দিতে শুরু করে। এলাকার লোকজন তাদের ধ্বংসক্রিয়া দেখে হতবাক হয়ে যায়। প্রতিবাদের ভাষা খুজে পাচ্ছিলনা। মুখে মুখে প্রতিবাদ জানালেও কান দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তারা অনেকের সাথে কথা বললেও যেন কেউ কারো কথা শুনতে নারাজ। তাদের মনোভাব ধ্বংস করা- এমনটাই মানুষের কাছে অনুভ‚ত হতে থাকে। সোমবার সকালে কুল্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন চৌধুরী এলাকার শত শত মানুষকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে কাজে ব্যবহৃত ইটখোয়া, বালি রাস্তা থেকে উপড়ে গর্তের সৃষ্টির দেখে সবাই হতবাক হয়ে যায়। ততক্ষণে অনুমান ১০০ মিটার রাস্তা খুড়ে তছনছ করা হয়ে যায়। সেখানে দাড়িয়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপির সাথে মোবাইলে কথা বলা হয়। এমপি মহোদয় বিষয়টি ওয়াপদা ও এলজিইডির মাধ্যমে সমাধান করতে আদেশ দেন। এবং যে পর্যন্ত না সমাধান হয় ততক্ষণ পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আক্তার হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এক বছর আগে থেকে কাজ করা হচ্ছে। এনিয়ে পাউবো’র অনুমতি নেওয়া হয়েছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ওয়াপদার রাস্তাটি আমাদের, সেখানে কবে এলজিইডি কাজ শুরু করেছে আমাদের জানানেই। আমাদের থেকে কোন অনুমতিও নেয়া হয়নি। আমরা অনেক আগে থেকে ওয়াপদার বাঁধ ৪/৫ পুট উচু করার পরিকল্পনা করেছি। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, এ এলাকায় কখনো নদীর পানি উপচে যায়না। আশাশুনির অসংখ্য এলাকায় নদীর পানি বাধ উপচে জলোচ্ছ¡াস ও ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে এলাকা প্লাবিত হয়ে তাকে প্রতি বছর। সেসব এলাকায় বাধ উচু করা খুবই জরুরী, তা না করে এই এলাকায় কেন কোটি কেটি টাকা ব্যয় করছেন? এর সদুত্তর না দিতে পেরে অনেক আগের বাজেট এটি বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। এলাকাবাসীর দাবী জনস্বার্থে সড়কটি কার্পেটিং খুবই জরুরী। এব্যাপারে কাজের প্রায় শেষ দিকে এসে প্রতিবন্ধতা সৃষ্টি না করে কাজ শেষ করতে দেওয়ার জন্য তারা দাবী জানান।