এফএনএস স্পোর্টস: পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও তাদের সাবেক প্রধান কোচ জেসন গিলেস্পির মধ্যকার টানাপোড়েন এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয়। বকেয়া পাওনা, চুক্তি লঙ্ঘন ও পারস্পরিক অভিযোগের জটিল এই বিরোধ পৌঁছে গেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দফতরে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে হঠাৎ করেই পদত্যাগ করেন গিলেস্পি। তার অভিযোগ, বোর্ড তার চুক্তিভুক্ত আর্থিক সুবিধা পরিশোধ করেনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের জন্য যে বোনাসের প্রতিশ্রæতি তাকে দেওয়া হয়েছিল, তা আজও বকেয়া। শুধু তাই নয়, তার সহকারী টিম নিলসেনের চুক্তি নবায়ন না করা এবং তাকে নির্বাচক প্যানেল থেকে বাদ দেওয়াকেও চুক্তি লঙ্ঘনের অংশ হিসেবে দেখছেন তিনি।
তবে গিলেস্পির এই অভিযোগকে একপেশে বলেই মনে করছে পিসিবি। বোর্ডের দাবি, গিলেস্পি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে হঠাৎ পদত্যাগ করেছেন। চুক্তি অনুযায়ী, দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হলে তাকে অন্তত চার মাস আগে নোটিশ দিতে হতো, যা তিনি করেননি। পিসিবির মুখপাত্র জানান, ‘এ ধরনের আচরণ চুক্তিভঙ্গের শামিল, তাই আমরা তার আর্থিক দাবিগুলো বিবেচনায় নিচ্ছি না।’
বোর্ড আরও জানায়, তারা গিলেস্পির প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে। গিলেস্পির পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
এই আর্থিক বিরোধ এখন আইসিসির নজরে থাকলেও তারা এ ধরনের চুক্তিভিত্তিক অর্থনৈতিক ইস্যুেত হস্তক্ষেপ করতে পারবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। কারণ, আইসিসি সাধারণত খেলোয়াড়দের ও ম্যাচ সংক্রান্ত শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে; কোচিং বা প্রশাসনিক চুক্তি সংশ্লিষ্ট আর্থিক বিবাদে নয়।
গিলেস্পি জানিয়েছেন, পাকিস্তান ক্রিকেটে কোচিং করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি এতটাই হতাশ হয়েছেন যে ভবিষ্যতে আর পূর্ণকালীন কোচ হিসেবে কাজ করার আগ্রহও হারিয়ে ফেলেছেন। উইজডেন পডকাস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে কাজ করে আমার কোচিংয়ের স্বাদই মিটে গেছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, তার ভ‚মিকা ক্রমেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল ‘ম্যাচডে স্ট্র্যাটেজিস্ট’ হিসেবেÑযা তার চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না।
এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে পাকিস্তান দলের কোচিং প্যানেলে এক ধরনের শূন্যতা দেখা দিয়েছে। গিলেস্পির বিদায়ের পর অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালনকারী আকিব জাভেদকেও সরিয়ে দিয়েছে পিসিবি। ফলে দলের জন্য একজন স্থায়ী প্রধান কোচ নিয়োগ এখন সময়ের দাবি। ইতিমধ্যে এ পদে আবেদন আহŸান করা হয়েছে, এবং আগামী ৫ মে আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ নির্ধারণ করেছে বোর্ড।