এফএনএস আন্তার্জাতিক ডেস্ক: তুরস্কের বৃহত্তম এবং জনবহুল শহর ইস্তাম্বুল বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে একটি শক্তিশালী ভ‚মিকম্পে কেঁপে উঠেছে। ভ‚মিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.২, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে শহরটিতে অনুভ‚ত অন্যতম শক্তিশালী কম্পন। ভ‚মিকম্পটি সৃষ্টি হয় মারমারা সাগরের সিলিভরি অঞ্চলে, যা ইস্তাম্বুল থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত।
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (অঋঅউ) এবং জার্মান ভ‚তাত্তি¡ক গবেষণা কেন্দ্র (এঋত) জানায়, কম্পনটির গভীরতা ছিল প্রায় ১০ কিলোমিটার। ভ‚মিকম্পের উৎপত্তি স্থল ভ‚পৃষ্ঠের কাছাকাছি হওয়ায় এটি ইস্তাম্বুলসহ আশেপাশের প্রদেশগুলোতেও স্পষ্টভাবে অনুভ‚ত হয়।
কম্পনের সময় শহরের বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহু মানুষ নিরাপত্তার খোঁজে দ্রæত ভবন ত্যাগ করে রাস্তায় নেমে আসেন। কেউ কেউ পার্কে গিয়ে জড়ো হন, কেউ বা আশ্রয় নেন উন্মুক্ত জায়গায় বা ভবনের সিঁড়িতে। ইউরোপীয় অংশের কিছু দোকানপাটও সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টিজিআরটি জানিয়েছে, একজন ব্যক্তি আতঙ্কে বারান্দা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন।
তুরস্কের পরিবহনমন্ত্রী আব্দুল কাদির উরালোওগøু জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে মহাসড়ক, বিমানবন্দর, ট্রেন এবং সাবওয়ে নেটওয়ার্কে কোনো ক্ষয়ক্ষতি শনাক্ত হয়নি।
ইস্তাম্বুলের গভর্নরের কার্যালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো ভবন ধসের খবর নেই, তবে শহরবাসীকে সতর্কতা অবলম্বনের আহŸান জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবন বা দুর্বল কাঠামোর কাছাকাছি না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এক্স (প্রাক্তন টুইটার)-এ দেওয়া বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে আশ^স্ত করেছেন তিনি।
ভবিষ্যৎ কোনো ভ‚মিকম্পের ক্ষেত্রে জনগণকে কী করতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনাও জারি করেছে রাষ্ট্রপতি কার্যালয়।
তুরস্ক এক ভ‚মিকম্পপ্রবণ দেশ। মাত্র এক বছর আগেই, ২০২৩ সালের ফেব্রæয়ারিতে, তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত এলাকায় ৭.৮ মাত্রার এক বিধ্বংসী ভ‚মিকম্পে প্রায় ৫৯ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। এছাড়া ১৯৯৯ সালে ইস্তাম্বুলের কাছাকাছি দিজমিত এলাকায় একটি ভ‚মিকম্পে প্রাণ হারান ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই ভ‚মিকম্পগুলোর ভয়াবহ স্মৃতি এখনো তাজা শহরবাসীর মনে।
তুরস্কের বর্তমান সরকার আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এ ধরনের দ্রæত প্রতিক্রিয়া ও যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করায় সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোর প্রশংসা করেছে স্থানীয়রা।