এফএনএস আন্তজার্তিক ডেস্ক: ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ভোররাতে এক ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় কতৃর্পক্ষ একে চলমান যুদ্ধের অন্যতম বড় ও ভয়াবহ হামলা বলে উল্লেখ করেছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে অন্তত ৯ জন নিহত এবং ৮০ জনের বেশি আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজন শিশু রয়েছে।
এই হামলা এমন এক সময় হলো, যখন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে শান্তি আলোচনার ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেন। ট্রাম্প দাবি করেন, একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত ছিল, যা যুদ্ধ বন্ধ করতে পারত; কিন্তু জেলেনস্কি তা প্রত্যাখ্যান করায় সংঘাত দীর্ঘায়িত হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানায়, রাশিয়া এক রাতেই কিয়েভের দিকে ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৪৫টি ড্রোন ছুড়েছে। শহরের আকাশজুড়ে দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা ধরে বিমান হামলার সতর্কসংকেত বাজতে থাকে। সিএনএন, এএফপি ও বিবিসির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, তারা একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন এবং কিয়েভের বিভিন্ন এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলি ও আগুন দেখতে পেয়েছেন।
রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ১৩টি স্থান, যার মধ্যে রয়েছে আবাসিক ভবন, গ্যারেজ ও সরকারি ভবন। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহর ক্লিমেঙ্কো জানিয়েছেন, রাজধানীর সিভিয়াতোশিন এলাকায় একটি ধ্বংস হওয়া ভবনের নিচে এখনও মানুষ আটকা পড়ে থাকতে পারেন। সেখানে দুই শিশু নিখোঁজ রয়েছে বলেও তিনি জানান। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মী, প্রকৌশলী ও প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে তল্লাশি চলছে।
এই হামলার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানরত প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নিজের সফর সংক্ষিপ্ত করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “এই হামলা নিঃশর্তভাবে বন্ধ করতে হবে। সারা বিশ^কে দেখতে হবেÑএই বর্বরতা কীভাবে চলেছে।”
তিনি আরও জানান, ইউক্রেন শিগগিরই আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় রাশিয়ার প্রভাবের প্রেক্ষিতে জেলেনস্কির এই সফর কূটনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। তবে এই হামলার কারণে সেই সম্ভাবনাময় সফর স্থগিত হয়ে পড়েছে।
রাশিয়ার এই হামলার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে দাবি করেন, যুদ্ধ বন্ধে একটি সম্ভাব্য চুক্তি প্রায় কার্যকর হওয়ার পথে ছিল। কিন্তু জেলেনস্কি মার্কিন শর্ত মেনে না নেওয়ায় তা ব্যর্থ হয়। এই মন্তব্যের পরপরই কিয়েভে হামলা ঘটা রাজনীতিক এবং কূটনৈতিক মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।