মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি \ যশোরের মনিরামপুরে গৃহবধু স্বরুপ জাহান সাথী হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে স্বামী আবদুর রশিদ মিন্টু, সতীন সুমা পারভীন ও তার ছেলে রিফাত হোসেন জিসানের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাতভর পুলিশের কয়েকটি টিম অভিযান চালিয়ে অভয়নগর উপজেলা শংকরপাশা এলাকা থেকে স্বামী মিন্টু ও তার ছেলে (সতিনের ছেলে) জিসানকে আটক করে। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে মিন্টু ও জিসান সাথী হত্যাকান্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততা থাকার স্বীকারোক্তি প্রদান করে। স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো কুড়ালটি চাতালের একটি কক্ষ থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে চালান দেওয়া হয়। মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জানান, সোমবার রাতে মামলার পর আসামিদের আটকের জন্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখা, সাইবার সিকিউরিটিসহ কয়েকটি টিম রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান। ভোর রাতে অভয়নগর উপজেলার শংকরপাশা এলাকার একটি বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আবদুর রশিদ মিন্টু ও তার ছেলে রিফাত হোসেন জিসানকে আটক করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিন্টু ও জিসান সাথী হত্যাকান্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিন্টুর ছেলে রিফাত হোসেন জিসান পুলিশকে জানান, কারনে অকারনে পিতা মিন্টু ও সৎমা সাথী পারভীন মিলে তার মা সুমা পরভীনকে অপমান করতেন। এছাড়া গত সপ্তাহে তার মাকে সৎমা ও পিতা মিলে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এনিয়ে পিতার সাথে জিসানের ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে মায়ের পথের কাটা সরাতে পিতার সহযোগীতায় রোববার গভীর রাতে জিসান ধারালো কুড়াল ও দা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরে ওই রাতেই মিন্টু তার স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। উল্লেখ্য উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত জাহাতাপ মুন্সির ছেলে আবদুর রশিদ মিন্টু ছিল একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক বিক্রেতা। ইতিপূর্বে অস্ত্র ও মাদকসহ র্যাবের হাতে আটক হয়ে কয়েকমাস হাজত বাসের পর জামিনে মুক্ত হয়। পরে সে এলাকায় আবারও সন্ত্রাসী ও মাদকের কারবার শুরু করে। খাটুয়াডাঙ্গা বাজারের পাশে মিন্টুর রয়েছে একটি রাইসমিল ও চাতাল। চাতালের পাশেই তার পাকা বাড়ি। এ বাড়িতেই দুই সন্তানসহ বড় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতো মিন্টু। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে তিন বছর আগে তার চাতালের শ্রমিক স্বরুপ জাহান সাথীর সাথে মিন্টু পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে সাথীকে মিন্টু বিয়ে করেন। সাথী কাজিয়াড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহিম বক্সের মেয়ে।