পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি \ পাইকগাছায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রাতের আধারে এক নারীকে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। নারীর বসতঘরের পাশ থেকে বোমা সাদৃশ্য কৌটা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অসহায় নারী সাহিদা বেগম বাদি হয়ে প্রতিপক্ষ স্থানীয় শেখ গোলাম ইকবাল (৬৫) ও তার দুই ছেলে সহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দাখিল করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সাহিদা বেগম উপজেলার চাঁদখালীর দেবদুয়ারের শেখ আঃ গফুরের স্ত্রী। জায়গা জমি নিয়ে একই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা শেখ গোলাম ইকবাল এর সাথে সাহিদা বেগমের বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে ইতোমধ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে থানা এবং আদালতে একাধিক মামলা এবং অভিযোগ হয়েছে। জানাগেছে, দেবদুয়ার শেখ পাড়ায় ওয়ারেশ সুত্রে সাহিদা বেগম পিতার ভিটেবাড়ীর ৮ শতক জমিতে ঘর বেধে বসবাস করছেন। অন্যদিকে স্থানীয় শেখ গোলাম ইকবাল এ জমি ক্রয় সুত্রে দাবি করেছেন। এ নিয়ে গত ৮ মাসে দু’পক্ষই থানা পুলিশ থেকে শুরু করে আদালতেও একাধিক পাল্টা-পাল্টি মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন। সর্বশেষ গত ৭ মে রাতে প্রতিপক্ষরা গৃহবধূ সাহিদা বেগম কে মারপিট করেছেন এবং বসতঘরের পাশ থেকে বোমা সাদৃশ্য বস্তু উদ্ধার হয়েছে এমন অভিযোগ এনে লিখিত এজাহার দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী সাহিদা বেগম। এ বিষয় সাহিদা বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরে শেখ গোলাম ইকবাল আমার পিতার ভিটেবাড়ীর ৮ শতক মুল্যবান জমি জোর করে দখল করে রেখেছিল। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে আমিনদ্বারা জরিপ করে আমি এ জমিতে ঘর বেধে বাস করছি। তিনি আরো জানান, জমি দখল করতে ব্যর্থ হয়ে প্রভাবশালী গোলাম ইকবাল একাধিক মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে আমাকে এবং আমার স্বামীকে হয়রানী করে আসছে। তিনি অভিযোগ করেন বিরোধের জেরে বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে গোলাম ইকবালের হুকুমে দুর্বত্তরা আমার বাড়িতে প্রবেশ করে ঘর ভাংচুর করতে গেলে আমি বাঁধা দেই। এ সময় দুর্বত্তরা আমার টেনে হেচড়ে মারপিট করে এক পর্যায়ে বসতঘরের পাশে বোমা জাতীয় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। স্থানীয়রা ছুটে আসলে তারা পালিয়ে যায়। বর্তমানে প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে বলে সাহিদা বেগম জানান। সাহিদা বেগমের প্রতিবেশি শেখ জিয়াদুল ইসলাম (৩৭) তাহিরা বেগম (৩২) ও আজিজ গাজী (৭০) জানান,ওই রাতে বিকট শব্দ পেয়ে ঘুম ভাঙে। এরপর চেচামেচি শুনে ঘটনাস্থলে এসে দেখি বোমা সাদৃশ্য টিনের কৌটা ফেলানো। কিছু বাঁশের পাতা পোড়া দেখা যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে থানার এসআই আসলাম জানান, জমির বিরোধে এরই মধ্যে দু’পক্ষই একাধিক পাল্টাপাল্টি মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন। সর্বশেষ সাহিদার মারপিট ও বোমা হামলার খবর পেয়ে ওইটা রাতেই ঘটনাস্থলে পৌছে ১টি মুনস্টার রংয়ের খোলা কৌটা উদ্ধার করে পাশে বাঁশ পাতায় আগুনে পোড়া চিহ্ন দেখতে পাই। এমন অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিপক্ষ শেখ গোলাম ইকবাল বলেন সাহিদা বেগম ৫ আগস্ট পরবর্তী আমার ভোগদখলীয় জমি দখল করে মামলা এবং অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে আসছে বলে তিনি দাবি করেন। এ বিষয়ে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ইদ্রীসুর রহমান জানান, সাহিদা বেগমের লিখিত অভিযোগের পুর্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে থানা পুলিশের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।