এড. তপন কুমার দাস \ অত্যন্ত বেদনা-বিধুর আবেগঘন পরিবেশে গতকাল অপরাহ্ণে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সম্মেলন কক্ষে জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো সাতক্ষীরার সদ্যবিদায়ী সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের অবিস্মরণীয় বিদায় সম্বর্ধনা। সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার দুই আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, অনুষ্ঠানস্থলে সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি প্রবেশ করার সাথে সাথে মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে বরণ করে নেন জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। বিদায়ী অতিথি শেখ মফিজুর রহমান ও প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি তাঁর বক্তব্যে বিদায়ী অতিথি শেখ মফিজুর রহমানকে একজন সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নিষ্ঠাবান, মানবতাবাদী ও দেশ প্রেমিক বিচারক হিসেবে আখ্যায়িত করে ভুয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন যত প্রতিকূল অবস্থা হোক না কেন শেখ মফিজুর রহমানকে দাবায়ে রাখা যাবে না। প্রধান অতিথি কে কাছে পেয়ে উপস্থিত সকলেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এর আগে সদ্য বিদায়ী অতিথি শেখ মফিজুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরায় তিনি জেলা জজ হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার আগে চার বছর সহকারী জজ হিসেবে ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে তিন বছর ১৮ দিন দায়িত্ব পালন করেছি। চাকরি জীবনের চার ভাগের এক ভাগ সাতক্ষীরায় চাকুরী করেছি। আমি সাতক্ষীরার সকল বিচারপ্রার্থীর ন্যায় বিচার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সাতক্ষীরার মানুষকে আমি খুব ভালোবাসি, সাতক্ষীরার মানুষের কথা আমি ভুলবো না। তিনি আরো বলেন, চিন্তার রাজ্যে প্রগতি আনতে হবে, তাহলে কর্মের রাজ্যে প্রগতি আসবে, তিনি আরো বলেন, সমস্ত রকম কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, শত ফুল ফুটতে দাও, ফুলের সুবাস ছড়াতে হবে, বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের ঋণ আছে, সেই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সেই জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কর্ম ও জীবনকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। দেশমাতৃকাকে ভালোবাসতে পারলে তবেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি ঋণ পরিশোধ হবে, দেয়াল নয় সম্পর্কের সেতু নির্মাণ করতে হবে। তিনি যখন আবেগঘন বক্তব্য রাখছিলেন তখন পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছিল, এবং হলভর্তি আইনজীবীদের মধ্যে হৃদয়ের হাহাকারে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। আরো বক্তব্য রাখেন, ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বিশ্বনাথ মন্ডল, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোঃ ফারুক ইকবাল, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন নাহার। এর আগে পিপি এড. আব্দুল লতিফ ও স্পেশাল পিপি এড. জহুরুল হায়দার বাবুর আবেগঘন বক্তব্য উপস্থিত সবার হৃদয় স্পর্শ করে। আরো বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পিপি এড. সৈয়দ জিয়াউর রহমান, এড. সাহেদুজ্জামান জিকো, এড. আলো, সাবেক সভাপতি এড. এম শাহ আলম, সাবেক সভাপতি এড. আব্দুল মজিদ প্রমূখ। বিদায় অনুষ্ঠানে বিদায়ী অতিথি শেখ মফিজুর রহমানের বর্ণাঢ্য কর্মকাল নিয়ে সংক্ষিপ্ত ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা ও আবেগ ঘন বক্তব্য প্রদান করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন নাহার। সভাপতিত্ব করেন জিপি এড. শম্ভুনাথ সিংহ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিচার বিভাগের সকল বিচারক, আইনজীবী, আইনজীবী সহকারী সহ আরো অনেকে।