এফএনএস: ঈদে আট বা নয় দিন করে বন্ধ থাকছে দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি। এর মধ্যে আটদিন বন্ধ থাকবে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি। তবে এ সময়ে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট খোলা থাকবে। গতকাল শুক্রবার বাংলাবান্ধা আমদানি-রপ্তানিকারক গ্র“পের সভাপতি আবদুল লতিফ তারিন বলেন, ৩০ এপ্রিল শনিবার থেকে ৫ মে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছয়দিন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আগামী ৭ মে সকাল থেকে পুনরায় কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে। তিনি বলেন, আমদানি-রপ্তানিকারক ও বন্দর সংশ্লিষ্টদের সর্বসম্মতিতে টানা ৮ দিন বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দর: সাপ্তাহিক ছুটি, মে দিবস ও ঈদ উল ফিতরের ছুটির কারণে টানা ৬ দিন, এর মাঝে একদিন অফিস হয়ে আবারো দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটি। তাতে মোট নয় দিন দেশের সবচেয়ে বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকছে। তবে এ ছুটিতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী পারাপারে চেকপোস্ট স্বাভাবিক থাকবে। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ঈদের ছুটি শুরু হয়। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি, ১ মে শনিবার মে দিবস ও ২ মে থেকে ৪ মে পর্যন্ত ঈদের ছুটি। এতে টানা ছয়দিন বন্ধ থাকছে দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানিসহ বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম। ৫ মে গত বৃহস্পতিবার ছুটি না থাকলেও ছুটি কাটাবেন অনেকেই। এরপর ৬-৭ মে সাপ্তাহিক ছুটি। সে হিসেবে ৮ মে থেকে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে এ বন্দরে। ইতোমধ্যে বেনাপোল কাস্টমস ও বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে বৃহস্পতিবারের ছুটি নিতে আবেদনের হিড়িক পড়ে। বেনাপোল স্থলবন্দরের ডেপুটি পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, ৫ মে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিলে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে। তা না হলে ৮ মে থেকে বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। হিলি স্থলবন্দর: ঈদুল ফিতর ও শ্রমিক দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ছয় দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তবে সচল থাকবে হিলি ইমিগ্রেশেন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম। সরকারি ছুটি ছাড়া হিলি কাস্টমস ও বন্দরের সব কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্র“পের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, আগামী ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। সেই সঙ্গে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২ অথবা ৩ মে হতে পারে ঈদ। এ কারণে আগামী ১ মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ৬ মে গতকাল শুক্রবার বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম এমনিতেই বন্ধ থাকবে। আগামী ৭ মে পুনরায় বন্দর দিয়ে দুই দেশের মাঝে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হবে। সোনাহাট স্থলবন্দর: অন্যদিকে ৯ দিন বন্ধ থাকবে কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি। গতকাল শুক্রবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বন্দরের কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সরকার রকীব আহমেদ জুয়েল। তিনি বলেন, ২৯ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। বিষয়টি সোনাহাট স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক), বিজিবির সোনাহাট ক্যাম্পের কমান্ডার, সোনাহাট স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতি ও ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবড়ি জেলার গোলকগঞ্জ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ৮ মে থেকে বন্দর দিয়ে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে। বুড়িমারী স্থলবন্দর: এছাড়া ঈদ, সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে টানা আটদিন বন্ধ থাকছে সব ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। গতকাল শুক্রবার থেকে এ ছুটি শুরু হয়েছে। জানা গেছে, ঈদুল ফিতর, শবে কদর, মহান মে দিবসের ছুটি নিয়ে উভয় দেশের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভা করে ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার থেকে আগামী গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত টানা আটদিন বুড়িমারী ও ভারতের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দরের সব ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ। শনিবার বন্দরের সব ধরনে কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে। বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সোহাগ এ সত্যতা নিশ্চিত করেন। বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদ উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের আমদানি- রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও স্থলবন্দর দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার আগের মতো স্বাভাবিক থাকবে।