এফএনএস: কুষ্টিয়ায় আলোচিত তিন খুন মামলায় তিনজনকে আমৃত্যু কারাদন্ড ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলা থেকে ১১ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। এ সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী। আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পলুতা ভাঙ্গা গ্রামের আসকর সরদারের ছেলে ফারুক সরদার, পশ্চিম আবদালপুর গ্রামের ইসারত আলী রেজার ছেলে কালু, কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার মজনুর ছেলে রোহান। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ঝিনাইদহর হরিনাকুন্ডুর বাহাদুরপুর এলাকার মৃত খোরশেদ মন্ডলের ছেলে ফারুক মন্ডল, একই উপজেলার ভায়না গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে আলতাফ মেম্বার, জলিল শেখের ছেলে লিয়াকত, এছেম শেখের ছেলে মনোয়ার হোসেন, করিমপুর গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে জমির উদ্দিন, আনসার শেখের ছেলে আকাউদ্দিন, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খোর্দবাখাইল গ্রামের আবু বক্করের ছেলে নুরুল এবং মাঝপাড়া এলাকার মৃত ওম্মাদ মন্ডলের ছেলে খাকচার মন্ডল। খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মোমিন, কাইয়ুম, সজিব আকতার, ইব্রাহিম, আমিরুল, আছরোফ, শামিম, রফিকুল, বাবুল এবং তুজাম হোসেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ৮ আগস্ট কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার কাইয়ুম সাখাওয়াতী নিখোঁজ হন। ১০ আগস্ট কুষ্টিয়া শহরের সাদ্দাম বাজার এলাকায় গণপূর্ত অফিসের গেটের সামনে কাইয়ুম সাখাওয়াতী, আইয়ুব আলী ও শামসুজ্জামানের খন্ডিত মাথা পাওয়া যায়। এসব মাথা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। সেদিন ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় মাথা তিনটি। একই দিন মাথাবিহীন তিনটি লাশ কুষ্টিয়ার ইবি থানার সোনাইডাঙ্গা এলাকার একটি পটলক্ষেত থেকে উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত কাইয়ুম সাখাওয়াতীর ভাই মুহাম্মদ আবদুল হাই বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থানায় এজাহার করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ১০ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। গতকাল মঙ্গলবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। পিপি বলেন, আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনকে আমৃত্যু ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ১১ জনকে খালাস দেন। আসামিদের সবাইকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।