এফএনএস: সামুদ্রিক মাছের বাধাহীন প্রজনন ও সংরক্ষণে পটুয়াখালীতে সমুদ্রে মাছ ধরা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মৎস্য বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোলা এমদাদুলাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময় নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে অধিকাংশ ট্রলার মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য বন্দরে এসে পৌঁছেছে। তবে আগত জেলেদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। ঋণের বোঝা ও পরিবারের খরচ মেটানো শঙ্কার কথা জানিয়েছেন অনেক জেলে। গভীর সমুদ্র থেকে ফেরা এফবি জান্নাত ট্রলারের মাঝি কুদ্দুস মিয়া জানান, সাগরে মাছ ধরে টেনেটুনে সংসার চলতো। অবরোধের কারণে চলে আসতে হলো। কিছু ছেঁড়া জাল রয়েছে। সেগুলো সেলাই করতে ৮-১০ দিন সময় লাগবে। তারপর বেকার সময় পার করতে হবে। এফবি বন্ধন ট্রলারের মাঝি সরোয়ার জানান, ট্রলারে কাজ করে গত বছর ৮০ হাজার টাকা ঋণী হয়েছি। ওই ঋণ এখনো শোধ করতে পারিনি। ওই ঋণ পরিশোধ তো দূরের কথা সংসার চালাবো কী করে সে চিন্তায় আছি। এফবি ভাই ভাই ট্রলারের মালিক মো. খোকন জানান, ২০ লাখ টাকা দাদন নিয়ে দুটি ট্রলার তৈরি করেছি। দুই বছরেও লাভের মুখ দেখিনি। এর ওপর অবরোধ এসে পড়েছে। এ পেশায় টেকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সাত ভাই ফিশের পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, আলীপুর-মহিপুরে পটুয়াখালীর বড় দুটি মৎস্য বন্দর রয়েছে। এখান থেকে কোটি কোটি টাকার মাছ চালান হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। তবে কয়েক বছর ধরে নিষেধাজ্ঞা, বৈরী আবহাওয়া, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি সব মিলিয়ে এ পেশা এখন হুমকির মুখে। জেলেদের সংগঠন আশার আলোর সভাপতি নিজাম শেখ জানান, জেলেদের প্রণোদনা বাড়ানোসহ নিষেধাজ্ঞাকালীন গভীর সাগরে প্রশাসনের টহল বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোলা এমদাদুলাহ জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন জেলার ২৫ হাজারের অধিক জেলেকে দুই ধাপে ৮৬ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। মাছ ধরা বন্ধ থাকলে সাগরে কাক্সিক্ষত ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।